স্বাধীন বাংলাদেশ
লিপি আক্তার
নিস্তব্ধ রাতের বুক চিরে
ভেসে আসে খটখট আওয়াজ
ক্রমশঃ ভারী হয় বাতাস,
আতংকিত মানুষ ভুলে যায় নিঃশ^াস নিতে
মুহুর্তেই গগণ বিদারী চিৎকার
অসহায় নির্যাতিত মানুষের দিগবিদিক ছুটোছুটি,
আগুনের লেলিহান শিখা
দাও দাও জলন্ত আগুনে পুড়ে যাওয়া
মানুষের বুকফাটা আর্তনাদ
তছনছ হয়ে যাওয়া সব স্বপ্ন মুখ থুবড়ে মাটিতে পড়ে।
নয়া বউটা রক্তাক্ত শরীরের চিহৃ বহন করতে না পেরে
গলায় দড়ি দেয়
আর বিধবা মেয়েটি
যার স্বামী ক’দিন আগে পাক সেনাদের গুলি খেয়ে
তার বুকে এসে শেষ নিঃশ^াস ত্যাগ করেছিল,
সেই মেয়েটি,
ডোবার জলে দেহের কলঙ্ক মোচনের
বৃথা চেষ্টা করে ভেসে ওঠে লাশ হয়ে!
এসব কিছুই বৃদ্ধ মা
বিধ্বস্ত চোখে চেয়ে দেখে
পাথর চোখ বেয়ে জল গড়ায় না,
কান্নাও আসে না
শুধু বিড়বিড় করে বলে চলে,
“পোলাডা তার যুদ্ধে গেছে ফিরা আইবো
একমুঠো সোনালী ধান লয়ে,
স্বপ্নের মাটিতে আবার স্বপ্ন বুনবো,
স্বপ্ন তুলবো সোনার খাঁচাটিতে”।
বুলেটের আঘাতে ছিটকে কঁকিয়ে ওঠে ‘মা’
কুন্ডলী পাকিয়ে পড়ে থাকে মাটিতে
মুখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ে
টকটকে লাল রক্ত
যে রক্ত ইতিহাসের পাতায় লিখে দেয়
“স্বাধীন বাংলাদেশ”।