ডাস্টবিনে ময়লা ফেলুন, জীবানুমুক্ত দেশ গড়ুন

news paper

সাঈমা আক্তার

প্রকাশিত: ১৩-১১-২০২১ দুপুর ১:৩১

43Views

আমাদের চারপাশে শহর-বন্দর, হাট-বাজার, রাস্তা-ঘাটের পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখতে সরকারি কিংবা ব্যক্তিগত উদ্যোগে কমবেশি ময়লা আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান ডাস্টবিনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কিন্তু আমাদের ব্যক্তি সচেতনতাবোধের অভাব এবং নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলার কার্যকরী আইন না থাকার ফলে পরিবেশে অপরিচ্ছন্নতার বিস্তৃতি ঘটছে। যেখানে-সেখানে ময়লা পড়ে থাকার ফলে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার চলাচল বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধের প্রভাবে নাকে-মুখে রুমাল রেখেও অনেক সময় চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়ছে। বৈশ্বিক করোনা মহামারি আমাদের পরিচ্ছন্ন থাকার গুরুত্ব বুঝিয়ে দিলেও আমাদের চারপাশের পরিবেশ এখনো অপরিচ্ছন্নতায় বিবর্জিত। তাছাড়া বর্তমানে করোনা মহামারির প্রকোপ থেকে নিজেদের বাঁচাতে পরিচ্ছন্নতার বিকল্প নেই, তা অনেক আগে থেকেই প্রমাণিত। তাই আমাদের পরিবেশকে সুন্দর রাখতে এবং শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে ময়লা-আবর্জনা নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে আমাদের অপরিষ্কার পরিবেশের পাশাপাশি স্বাস্থ্যঝুঁকিও বেড়ে যাবে নিয়মিত। আর এজন্য সব শ্রেণির মানুষের প্রতি আহ্বান, আপনাদের হাতের কাছে পড়ে থাকা যে কোনো ধরনের ময়লার আবর্জনা ডাস্টবিনে ফেলুন ও সেই ডাস্টবিনটি যথা সময় পরিচ্ছন্ন রাখুন।

সুস্বাস্থ্যই সব সুখের মূল। এ কথা কে না জানে। কিন্তু সে অনুসারে কাজ করে কয়জন? স্বাস্থ্য সম্পর্কে আমরা যে উদাসীন ও অজ্ঞ, দেশের বিভিন্ন স্থানে রক্ষিত ডাস্টবিনগুলোই তার উজ্জ্বল প্রমাণ। আমরা কলা খেয়ে খোসাটা রাস্তায় ফেলে দিচ্ছি, এতে পথচারীদের অনেকে পিছলে পড়ে আহত হচ্ছে। বিস্কুট বা প্যাকেটজাত খাবার খেয়ে প্যাকেটটা যেখানে-সেখানে ফেলে দিচ্ছি, পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। চা খেয়ে প্লাস্টিকের কাপটা মাঠেই ফেলে চলে আসছি। ডাব খেয়ে খোলটা রাস্তায় ফেলে যাচ্ছি। ইনজেকশনের সুচ বা সিরিঞ্জ এখানে-সেখানে ফেলে রাখছি। এর মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু বংশ বৃদ্ধি করছে এবং মানবদেহে তা বাসা বাঁধছে। এমন আচরণ নিরক্ষর মানুষ তো করছেই, শিক্ষিত মানুষও করে যাচ্ছে। কিন্তু চাইলেই আবর্জনা ডাস্টবিনে ফেলতে পারি। এতে অসম্মান বোধ করার কিছু নেই। আসুন, নিজে পরিবেশ ও স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হই এবং অন্যকে এ ব্যাপারে উৎসাহিত করি।

পরিষ্কার না রাখলে অথবা যত্ন না করলে যে কোনো জিনিসই তার আসল সৌন্দর্য হারায়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ আমাদের সবারই কাম্য। কিন্তু আমরা আমাদের চারপাশের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে পারি না। আমরা চা পান করে চায়ের প্লাস্টিকের কাপটা যত্রতত্র ফেলে দেয়, চিপস খেয়ে চিপসের প্যাকেটটি ফেলে দিই রাস্তায়, আইসক্রিম খেয়ে এর কাটিটা ফেলে দিই পথের মাঝখানে। এগুলো যেখানে-সেখানে না ফেলে আমরা নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে ফেলে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে পারি।সকলে নিজ দায়িত্বে বাড়ির সামনের অংশ প্রতিদিন পরিষ্কার রাখলে নিজ এলাকা সুন্দর থাকবে। এলাকার সবাইকে যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলা থেকে বিরত থাকতে হবে। যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলার ফলে বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এছাড়া উক্ত এলাকায় সৌন্দর্যহানিও ঘটছে।পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা একটি এলাকার মর্যাদা বহুগুণে বৃদ্ধি করে। আপনার বাড়ির সামনে এবং আশেপাশের অংশে নিজ দায়িত্বে পরিষ্কার রাখুন, বাড়ির প্রতিদিনের ময়লা আবর্জনা প্যাকেট করে ময়লার ভ্যানে ফেলুন, জানালা দিয়ে ময়লা ফেলা থেকে বিরত থাকুন ও আপনার সন্তানকে শৈশব থেকে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকতে অভ্যস্ত করুন। সুস্থ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জীবনযাপন করুন। আসুন আজ থেকেই আমরা নিজের কাছে শপথ করি, আমার দেশের রাস্তা আমার দ্বারা নোংরা হবে না। বাংলাদেশ নোংরা দেশ না বলে নিজের দেশ নিজে পরিষ্কার রাখার চেস্টা করুন। যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা না ফেলে নিদিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করি।

সাঈমা আক্তার 
শিক্ষার্থী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় 
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ।

আরও পড়ুন