জ্যাকসন হাইটস জার্নাল
প্রকাশিত: ১৩-১১-২০২১ দুপুর ৩:৩৭
শৈশব থেকেই অজানাকে জানার প্রতি এবং বিভিন্ন সামাজিক ও গণযোগাযোগ মাধ্যম সম্পর্কে জানার প্রতি আকবর হায়দার কিরনের অদম্য আগ্রহ ছিল। জাতীয় এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান বেতার সম্প্রচার, দেশি-বিদেশি বই, ম্যাগাজিন ও সংবাদপত্র পাঠ ও পর্যালোচনা তার কাছে ছিল বহি:র্বিশ্ব সম্পর্কে আগ্রহ নিবৃত্তির উপায়। সম্ভবত এগুলোই পরিণত বয়সে আকবর হায়দার কিরনের সাফল্যের সাথে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করার পথ সুগম করেছে।
আকবর হায়দার কিরনের সাংবাদিকতা এবং লেখালেখি জীবনের শুরু কলেজে পড়ার সময় বার্ষিক ম্যাগাজিনে কবিতা দিয়ে। প্রথম কভার স্টোরি সচিত্র স্বদেশ এ ঢাকায় কর্মরত বিদেশি মিডিয়ার দেশি ও বিদেশি সাংবাদিকদের নিয়ে। ইংরেজি দৈনিক ডেইলি নিউজের সহ-সম্পাদক হিসেবে প্রত্যক্ষ সাংবাদিকতা জীবনের শুরু। সাপ্তাহিক বিচিত্রার কুটনৈতিক সংবাদদাতা ছিলেন বহু বছর। নব্বই দশকের শুরুতে ঢাকায় বিবিসি-র একজন স্ট্রিংগার হিসেবেও কাজ করেছেন। আমেরিকা থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ঠিকানা, সাপ্তাহিক বাংগালি, ভয়েস অব বাংলাদেশ লস এন্জেলেস, ইত্যাদির বাংলাদেশ প্রতিনিধি ছিলেন। তারপর ৯৪ সালে নিউ ইয়র্কে স্থায়ী হওয়ার পর যথাক্রমে অধুনালুপ্ত সাপ্তাহিক বিচিত্রা ও সাপ্তাহিক ২০০০ এর যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি ছিলেন। একই সাথে তিনি নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক বিদেশ বাংলার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি ভয়েস অব আমেরিকার নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি ঢাকা থেকে প্রকাশিত বিনোদন বিচিত্রার যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করছেন। আকবর হায়দার কিরন আমেরিকা বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের অন্যতম ভাইস প্রেসিডেন্ট। বাংলাদেশে অবস্থানকালে তিনি সাংবাদিক হিসেবে চীন, সোভিয়েত ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন দেশ সফর করেন আমন্ত্রিত হয়ে। বাংলাদেশে ডি-এক্সিং-এর পথিকৃৎ হিসেবে তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বেতার সম্প্রচার পর্যালোচকের দায়িত্বও পালন করেন এবং বাংলাদেশ বেতারের বাংলা ও ইংরেজি সার্ভিস থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠান পরিচালনা করতেন।
বইটি সম্পর্কে লেখক বলেন,‘জ্যাকসন হাইটস জার্নাল’ বইটির প্রধান উপজীব্য প্রবাস জীবন। বিশেষ করে বাংলাদেশী অধ্যুষিত নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস এলাকার জীবন যাপন নিয়ে। এর ভেতর আরো রয়েছে বাংলাদেশ থেকে আসা কবি কামাল চৌধুরী, কবি শহীদ কাদরী এরকম কবি, সাহিত্যিক,উপন্যাসিকসহ লেখক বৃন্দের কথা। এছাড়াও বাঙালির সত্তায় মিশে থাকা প্রাণের বই মেলা, ১লা বৈশাখ , নববর্ষ , ঈদ এরকম মিলনমেলা ইত্যাদি নানান প্রাসঙ্গিক বিষয়।যা লেখকের মানসপটে যে চেতনা জাগ্রত হয়েছে তার অপরুপ প্রকাশ। সম্মানিত পাঠক বইটি পাঠ করে ভুল ত্রুটি ও তাদের সুচিন্তিত মতামত জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।
‘জ্যাকসন হাইটস জার্নাল’ সম্পর্কে প্রকাশক.......বলেন, আমেরিকা প্রবাসীদের কাছে নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস এলাকা বিশেষভাবে পরিচিত। যুক্তরাষ্ট্র সফরে এসে কোনো বাংলাদেশী জ্যাকসন হাইটস না এলে যেন সেই সফর অপূর্ণ থেকে যায়। বাংলাদেশ থেকে রাজনীতিবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কিংবা মন্ত্রী যেই আসুননা কেন, একবার জ্যাকসন হাইটস আসবেননা- এ হতেই পারেনা। এ যেন দেশের চেয়েও বেশি দেশ। এখানকার চায়ের দোকানে যেমন রাজনীতি নিয়ে বিতর্ক সহ নানান বিষয় আলোচনার ঝড় ওঠে, তেমনি যখন তখন রাত-বিরাতে বেলা অবেলায় পাড়া প্রতিবেশীদের ঘুম ভাঙে বাংলা শ্লোগানে, কিংবা ফুটপাথের নিয়ন্ত্রণহীন উচ্চকিত আড্ডায়। বাংলা নতুন বছর, চাঁদরাত, পূঁজা পার্বনে জ্যাকসন হাইটসে তিল ধারনের ঠাঁই থাকে না।জ্যাকসন হাইটসের নানান কাহিনী নিয়ে সাংবাদিক আকবর হায়দার কিরনের নিয়মিত কলাম ‘জ্যাকসন হাইটস জার্নাল’ সাপ্তাহিক বাঙালীতে প্রকাশিত হয়েছে দীর্ঘদিন। ‘জ্যাকসন হাইটস জার্নাল’ শিরোনামের এ বইয়ে সেগুলোর নির্বাচিত ১০টি লেখা স্থান পেয়েছে। পাঠকদের আনুকূল্য পেলে অপ্রকাশিত লেখাগুলোও ভবিষ্যতে প্রকাশের ব্যবস্থা করা যাবে।
বইটি উৎসর্গ করা হয়েছে, মাহবুবুল হায়দার মোহন, বীর মুক্তিযোদ্ধা, গণসংগীত শিল্পী, অকাল প্রয়াত সহোদরের শ্রদ্ধায়। আর প্রচ্ছদে রাগিব আহসান, নিহার সিদ্দিকীর ছবি অবলম্বনে।