এনার্জি প্লাস ঘিরে সক্রিয় বিশেষ সিন্ডকেট

সরকারি প্রতিষ্ঠানে লাইট সরবরাহ ও স্থাপনে হরিলুটের অভিযোগ

news paper

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২-১২-২০২১ দুপুর ৩:৪৮

5Views

 এনার্জি প্লাস লি:। লাইট ও সুইচ  আমদানীকারক ও সরবরাহকারি একটি কোম্পানী। বিভিন্ন মানের লাইট আমদানী করে এ প্রতিষ্ঠানটি সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ ও স্থাপনের কাজ করে আসছে। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে এ কোম্পানীটি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে উঠেছে বলে জানা গেছে। আলাদিনের চেরাগ পেয়ে যাওয়া এ কোম্পানীটির নেতৃত্বে  গণপূর্ত  অধিদপ্তরের কিছু দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তার যোগসাজুস্যে গড়ে ওঠা  বিশেষ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সরকারের কোটি কোটি টাকা লোপটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে নিম্মমানের লাইট সরবরাহের মাধ্যমে ব্যাপক পরিমাণ অর্থ লোপাটের ঘটনা ঘটেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।       
যে সকলপ্রতিষ্ঠানে এনার্জি প্লাসের নিম্নমানের লাইট সরবরাহের মাধ্যমে সরকারি অর্থের হরিলুট হয়েছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে সে প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে - বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন-পিএসসি, ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন, জাতীয় সংসদ ভবন, এনএসআই সদর দপ্তর, বঙ্গবন্ধু জাদুঘরসহ আরো কিছু প্রতিষ্ঠান।  এ সব কটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সরবরাহকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে লাইট সরবরাহ ও স্থাপনের কাজ করেছে এনার্জি প্লাস নামক কোম্পানীটি। 
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন-পিএসসি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে গণপূর্ত অধিদপ্তরের পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট-পিডাব্লিউডি এর ই/এম বিভাগ ৬। পিডাব্লিউডির নিবন্ধিত ঠিকাদার মেসার্স মেরি কনস্ট্রাকশনের মাধ্যমে এ কাজ করানো হয়েছে। এখানে নিম্নমানের লাইট ও সূইচ অনেক বিশী মূল্যে বএবং নিম্মানের লাইট সুইচের গায়ে উন্নত মানের কোম্পানীর নকল সিল লাগিয়ে সরবরাহ করেছে কোম্পানীটি। এখানে ঠিকাদার সরকারি কর্মকর্তা এবং সরবরাহকারি কোম্পানী পরষ্পর যেগ সাজুস্যে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে। 
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আরেকটি প্রকল্প-বঙ্গবন্ধু জাদুঘর। এটিও বাস্তবায়ন করছে পিডাব্লিউডি এর ই/এম বিভাগ ৬। জানা গেছে, প্রকল্পটির ঠিকাদার এক সময়কার বিএনপি নেতা মিজান। তাদের থেকে বড় অঙ্কের কমিশনের বিনিময়ে ওয়ার্ক অর্ডার (কার্যাদেশ) নিয়ে ওই প্রকল্পে নিম্নমানের লাইট সরবরাহ করছে  এনার্জি প্লাস। রাজধানীর আব্দুল গণি সড়কের ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনেও নিম্নমানের লাইট সরবরাহ করেছে একই চক্র।  
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, জাতীয় সংসদ ভবনের মতো রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় লাইট সরবরাহকাজে ব্যাপক অনিয়ম ও অপচয় হয়েছে। যেটি বাস্তবায়ন করছে পিডাব্লিউডি এর ই/এম বিভাগ ৭। অভিযোগ রয়েছে, এই প্রকল্পেও সিন্ডিকেট করে বিতর্কিত একটি প্রতিষ্ঠানকে লাইট সরবরাহের কাজ দেয়া হয়। সংসদ ভবনের মূল ভবনের বাইরে চারিদিকে ১৮ টা পয়েন্টে যে লাইট থাইল্যান্ড থেকে সরবরাহ করা হয়েছে তার এক একটা লাইটের দাম ১ লাখ টাকা!
আর এনার্জি প্লাসের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ হচ্ছে তারা মিথ্যে ঘোষণায় থাইল্যন্ড থেকে নিম্নমানের লাইট ও সুইচ পেয়ে  এনে নকল সিল লাগিয়ে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করে চলেছে। 
জানা গেছে এনার্জি প্লাস মূলত: হেভেন গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান। সরকারের রাজস্ব ফাঁকিসহ নানা অনিয়মের কারণে এ প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা চলমান ও তদন্তাদীন রয়েছে। বাংলাদেশের সকল মডেল মসজিদে লাইটিং ও ফিটিংয়ের কাজ করেছে এই হেভেন গ্রুপ।  সেখানেও ব্যাপক অনিয়মের অবিযোগ রয়েছে। 


আরও পড়ুন