আন্তর্জাতিক ব্রেইল ডে অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধকতা জয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলের আহ্বান

news paper

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৫-১-২০২২ দুপুর ৩:৩৬

2Views

জাতিসংঘ ঘোষিত “আন্তর্জাতিক ব্রেইল ডে” উপলক্ষে  দিনব্যাপী  যৌথ অনুষ্ঠানে  প্রতিবন্ধিদের  ভাগ্য উন্নয়নে পারিবারিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় দৃষ্টিভঙ্গি বদলের আহ্বান জানানো হয়েছে।  জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধি সংস্থা, দৈনিক কালের ছবি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান এসআইডিআর- এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বলা হয়েছে কাউকে ১শ’, ৫শ’ বা ১ হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়ে ভাগ্য উন্নয়নের মানসিকতা পরিবর্তনটাই এখন বড় বেশী জরুরী। এটা করতে না পারলে প্রতিবন্ধিরা তিমিরেই থেকে যাবে। 

অন্ধদের জন্য শিক্ষণ পদ্ধতির উদ্ভাবক লুইস ব্রেইলির জন্মদিন ও আন্তর্জাতিক  ব্রেইল ডে  উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি দুটি পর্বে ভিভক্ত ছিলো। প্রথম ভাগে স্মরণ, সাদা ছড়ি বিতরণ ও র‌্যালি, এবং দ্বিতীয় পর্বে ছিলো “প্রতিবন্ধকতা দূর করতে চাই মানবিক সমাজ” শীর্ষক আলোচনা।  দিনের শুরুতে শতাধিক দৃষ্টি প্রতিবন্ধি সমাবেত হয় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে। সেখানে তারা অন্ধদের জন্য শিক্ষণ পদ্ধতির উদ্ভাবক লুইস ব্রেইলকে স্মরণ করেন। এ পর্বে অন্ধদের মাঝে সাদা ছড়ি বিতরণ করেন বাংলাদেশ আওয়ামী মৎসজীবি লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. মমতাজ খানম ও সিও এর নির্বাহী পরিচালক শামসুল আলম। 

আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তুরষ্কে নিয়োজিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মসয়ূদ মান্নান। জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধি সংস্থার মহাসচিব  আইয়ূব হাওলাদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ওয়াশিংটন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাদেক মোহাম্মদ খান, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী জাকির হোসেন, হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ডের কান্ট্রি  ডিরেক্টর আতাউর রহমান মিটন, স্বেচ্ছাসেবি সংস্থা সিও এর নির্বাহী পরিচালক  শামসুল আলম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির সদস্য মোফাজ্জল হক, মৌচিক কর্মচারি সমবায় সমিতির সভাপতি গোলাম রসুলসহ অনেকে। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে  রাষ্ট্রদূত  মসয়ূদ মান্নান  বলেন, সরকার সকল ক্ষেত্রে সমান্তরাল উন্নয়ন সমতা রক্ষা করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের এখন সময় সকল প্রতিবন্ধকতা উত্তরণে সমতা ভিত্তিক সুযোগ তৈরী ও কাউকে বাদ না দিয়ে উন্নয়ন এগিয়ে নেয়া। তিনি বলেন, দেশে বিদেশে তিনি দৃষ্টি প্রতিবন্ধিদের ভাগ্য উন্নয়নে গৃহিত যে কোন কাজের সাথে থাকবেন।  প্রতিবন্ধকতা জীবনের জন্য চ্যালেঞ্জ হলেও এ চ্যালেঞ্জ জয়ের ইতিহাসও রয়েছে। বিশেষ অতিথিগণ তাদের বক্তব্যে প্রতিবন্ধিদের পাশে থাকার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন। আয়োজক প্রতিষ্ঠান দৈনিক কালের ছবি এর সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম বলেন, মানসিকতা পরিবর্তনের প্রয়োজনীয় বার্তা নিয়ে তারা এখন থেকে সামাজিক সচেতনতা তৈরীতে কাজ করে যাবেন। সেই সাথে এ কাজে গণমাধ্যমের দায়- এর বিষয়টিও সামনে আনার চেষ্টা করবেন। 

সভাপতির বক্তব্যে- আইয়ূব হাওলাদার বলেন, আমাদের পাশে অনেকেই থাকার কথা বলেন, কিন্তু যে মাত্রায় বলেন পরে সেটা আর পাওয়া যায় না। রাষ্ট্রের অনেক সুবিধা প্রতিবন্ধিদের জন্য দেয়া আছে। কিন্তু তা কার্যকরে যে মানুষগুলো রয়েছেন তাদের বেশীরভাগই আন্তরিক নন। তাই প্রতিবন্ধিরা যে তিমিরে ছিলেন সেখানেই থেকে যায়। তাদের সংগ্রামটা প্রায় একেবারেই একার হয়ে পড়ে। তিনি আরো বলেন, এ জন্য রাষ্ট্র যতটা দায়ী তার চেয়ে বেশী দায়ী পরিবার। এক পরিবারের ৫ সন্তানের মধ্যে একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধি হলে তার উন্নয়নের চিন্তা না করে পরিবারের সদস্যরা তাকে ভিক্ষার ঝুলি ধরিয়ে দিয়ে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে দেয়। আর তার ভিক্ষার  টাকায় অন্য সন্তানদের লেখাপড়া চলে। এটাই বাস্তবতা। এই মানসিকতার পরিবর্তন দরকার। সেই সাথে মানবিক সমাজ গঠনে সবার এগিয়ে আসা জরুরী। তিনি বলেন, ফ্রান্সে জন্ম নেয়া লুইস ব্রেইলি আমাদের জন্য আর্শিবাদ হয়ে আছেন। থাকবেন। এখন আমাদের ভাগ্য গড়তে নিজেদেরই সংগ্রাম করে যেতে হবে। এখানে রাষ্ট্র একটা বড় ভূমিকা নিতে পারে। এটা জরুরী। অনুষ্ঠানের সহ আয়োজক ছিলো গ্লোবাল মেমোরা লি. এসপিকেএস, এক্সিলেণ্ট ওয়ার্ল্ড, হিউম্যানিস্ট সোসাইটি, ও ভিকটিম সাপোর্ট ফাউন্ডেশন। 

 


আরও পড়ুন