ওএমএস কার্যক্রমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী লাভবান হলেও ভাগ্য ফেরেনি ডিলারদের

news paper

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৬-২-২০২২ দুপুর ১:৪৫

8Views

বাংলাদেশ সরকার করোনা মহামারীর কারণে সবার জন্য খাদ্য নিশ্চিত করতে খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক তালিকাভুক্ত ডিলারদের মাধ্যমে ওএমএস এর খাদ্য চাল ও আটা দোকান বা ট্রাক সেল বাজারজাত শুরু করে। এতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী লাভবান হয় সেই সাথে বাড়তে থাকে লাইনে মানুষের ভিড়। সরকার চাহিদা মোতাবেক বিভিন্ন সময়ে বরাদ্দ কমবেশি করলেও যেমন সরকারের সফলতা আসে ঠিক তেমনি লাভবান হচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষ। কিন্তু এতে ভাগ্য ফিরছে না ডিলারদের। 
ঝড় বৃষ্টি সহ্য করে, রোদে পুড়ে সরকারের প্রকল্প ও দেশের মানুষের সেবা করে যাচ্ছে স্বল্প পুঁজির। এমনকি মহামারী করোনা সময়ে অনেক ডিলার এবং স্টাফরা করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। বিভিন্ন ডিলারদের সাথে কথা বলে জানা যায় কেজি প্রতি দুই টাকা কমিশনের চাল আটা বিক্রি করতে হয়।  প্রতিদিন ট্রাক ভাড়া দায়ভারসহ ৪ জন শ্রমিকের বেতন ও আনুষঙ্গিক খরচ সন্ধ্যাবেলা গুণতে হয় লোকসান। তারপরও ডিলারগণ দেশ ও দেশের মানুষের সেবা চালিয়ে যাচ্ছে। স্বল্পআয়ের শ্রমজীবী মানুষের জন্য কম দামে ওএমএসের (ওপেন মার্কেট সেল)  চাল আটা বিক্রি করছে সরকার। এই কর্মসূচিতে ডিলারদের পাশাপাশি সিসিডিআ,  এআরওসহ তদারকির দায়িত্বে থাকা মানুষটিরও কঠোর পরিশ্রমের ফসল ওএমএস কর্মসূচি।

ইতোমধ্যে কর্মসূচি উপজেলা পর্যায়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কর্মসূচির ভর্তুকি অনু শতাংশ বা ৮০০ কোটি টাকা বাড়িয়েছে সরকার। কিন্তু এ কর্মসূচিতে ডিলারদের কোনো সুযোগ-সুবিধা না থাকাই অনেক ডিলার হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, আমাদের কমিশনটা আরেকটু বাড়ালে সরকারের কর্মসূচি কোন বাধা ছাড়াই আরো সফলতার মুখ দেখতো। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, জুরাইন, বাবুবাজার, দয়াগঞ্জ, মতিঝিল এজিবি কলোনি, খিলগাঁও এর কয়েকটি ওএমএস কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে বাজারমূল্য প্রায় অর্ধেক দামে চাল আটা কিনতে দোকান ও ট্রাকের সামনে মানুষের দীর্ঘ লাইন। তবে বরাদ্দ কম থাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য মানুষ এবং সেই তার সাথে ডিলাররাও পরিশ্রমে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। 

ডিলাররা জানান, বর্তমানে একজন ডিলার সর্বোচ্চ ২ টন চাল ও ১টন আটা বরাদ্দ পান তারা, যা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। অন্যদিকে ক্রেতারা জানান, বাজারে চাল-আটার দামে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। সে কারনে স্বল্প দামে চাল -আটা কিনতে ওএমএস’র দিকে ছুটছেন তারা।এতে এখন কয়েকগুণ বেড়েছে ওএমএসের চাল আটা বিক্রি। কেউ কেউ ওএমএসের চাল ও আটা বিক্রি শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই নির্ধারিত স্থানে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন।

জানা গেছে, ১৮ জানুয়ারি নিয়মিত বাজেট বরাদ্দের বাইরে অতিরিক্ত ৩ লাখ টন চাল, ১লাখ টন গম অনুমোদন করেছে অর্থ বিভাগ। আগামী জুন পর্যন্ত দরিদ্র মানুষের মধ্যে চাল আটা বিক্রি করা হবে। নিম্নআয়ের মানুষের জন্য এই অতিরিক্ত খাদ্য বরাদ্দ চেয়ে দুই সপ্তাহ আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়। 
বর্তমানে ওএমএসের প্রয়োজনীয় পণ্য গুলোর জন্য মোট ভর্তুকি ৪৭৬০ কোটি টাকা, যা চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে ৪০০০ কোটি টাকা। এ অর্থ মূল বাজেট বরাদ্দ থেকে ১৯ শতাংশ বেশি।কর্মসূচির জ্বালাটা কালোবাজারী রোধে কঠোর মনিটরিং করছে খাদ্য অধিদপ্তর। ওএমএসের চাল আটার দাম বাজারে প্রায় অর্ধেক, ফলে অনেকেই চাল-আটা কালোবাজারি করছে। খাদ্য অধিদপ্তরের পরিদর্শনেও এর প্রমাণ মিলেছে। এজন্য অনেকে ডিলারশিপ স্থগিত করা হয়েছে। 
বিজ্ঞজনেরা মনে করেন ডিলারদের কমিশন বাড়িয়ে দিলে হয়তো কালোবাজারি রোধ করা যেত। ডিলারদের দাবি সরকার বা কর্তৃপক্ষ কমিশন বাড়িয়ে ওএমএস কর্মসূচিকে আরো বেগবান করবে।


আরও পড়ুন