নাসির এ চৌধূরীর স্বপ্নের গ্রীণডেল্টায় চলছে চরম অনিয়-অর্থ সংকট

news paper

জাহিদুল ইসলাম শিশির

প্রকাশিত: ১০-৫-২০২২ বিকাল ৬:০

26Views

 ইন্স্যুরেন্স জগতের ক্যারিসমেটিক লিডার নাসির এ চৌধূরীর স্বপ্নের গ্রীণ ডেল্টা ইন্স্যূরেন্স কোম্পানীতে চলছে চরম অনিয়ম ও অর্থের সংকট। যা বীমা শিল্পের সাথে জড়িতেদের জন্য নতুন এক বেদনার কাব্য হতে যাচ্ছে।  সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, কোম্পানীটি এখন ক্লেইম  পরিশোধ করতে পারছে না। রি ইন্স্যুয়ার কোম্পানী বার বার তাগিদ দেয়ার পরও টাকা দিতে পারছে না কোম্পানীটি। সেই সাথে কোম্পানীর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ আসতে শুরু করেছে। অথচ এ কোম্পানীটি শুরু থেকেই সুনামের সাথে ব্যবসা পরিচালনাসহ সকল দিক থেকে সুনাম অর্জন করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। সম্পদের সীমাবদ্ধতা, জনবলের সংকট, আইনী সীমাবদ্ধতা, ও ইনফ্রাস্টাকচারের অপ্রতুলতার মধ্যেই নাসির এ চৌধূরী এ কোম্পানীটিকে বীমা জগতের একটি উদহরণ হিসেবে দাড় করান। কিন্তু অল্পদিনেই ম্লান হতে বসেছে কোম্পানীর সব সুখ্যাতি। 

১৯৫৮ সালে তৎকালীন পাকিস্তানে নাসির এ চৌধুরীর ইন্স্যুরেন্স সেক্টরে পেশাগত জীবন শুরু হয়েছিল। ইংল্যান্ড, জার্মানি এবং পাকিস্তান থেকে ইন্স্যুরেন্স শিল্পে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নাসির চৌধুরী স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স কর্পোরেশনে যোগদান করেন। প্রশিক্ষিত এবং অভিজ্ঞ সিনিয়র পেশাদার হিসেবে তাকে নবগঠিত বাংলাদেশ বীমা কর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে নিয়োগ করা হয়েছিল। ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত তিনি এই পাবলিক সেক্টর কোম্পানির প্রধান ছিলেন এবং তার তত্ত্বাবধানে প্রায় ২,৮০০ কর্মচারী কাজ করেছেন। পরবর্তীতে ১৯৮৫ সালে যখন বাংলাদেশ সরকার বেসরকারি খাতকে বীমার জন্য উন্মুক্ত করে, নাসির চৌধুরী তার কয়েকজন বন্ধুর সাথে গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স প্রতিষ্ঠা করেন। আজ গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নন-লাইফ (সাধারণ) ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, প্রায় ৩৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক বাজারে কোম্পানিটি নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। বাংলাদেশের বীমা ও ব্যবসায়িক খাতে খুবই সুপরিচিত একটি নাম নাসির চৌধুরী। ২০০১ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। এছাড়াও বাংলাদেশ মালয়েশিয়া চেম্বার অফ কমার্স (বিএমসিসিআই) এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অফ কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশ-এর সদস্য, বাংলাদেশ-জার্মান চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির-ইসি সদস্য, মেট্রোপলিটন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য নাসির চৌধুরী৷ তাছাড়াও যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, হংকং, মালয়েশিয়া, জাপান এবং ভারতের বিখ্যাত বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত তিনি।বীমার ক্ষেত্রে তার অসামান্য অবদানের জন্য জনাব চৌধুরী বেশ কয়েকটি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পুরষ্কার পেয়েছেন, যেমন- ২০০৯ সালে লন্ডনে ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিটি ক্রাউন অ্যাওয়ার্ড, ২০০৯ সালে কোয়ালিটিতে নেতৃত্বের জন্য ইন্টারন্যাশনাল স্টার অ্যাওয়ার্ড, ডিএইচএল-ডেইলি স্টার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ২০০৯। এগুলো ছাড়াও বাংলাদেশের বীমা খাতে তার অবদানের জন্য ২০১৪ সালে ১৮তম এশিয়া ইন্স্যুরেন্স ইন্ডাস্ট্রি অ্যাওয়ার্ড-এ লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড এবং ২০২০ সালে বিড়লা ইন্সটিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট টেকনোলজি (বিমটেক) থেকে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন এই জনপ্রিয় বীমা ব্যক্তিত্ব। তার হাতে গড়ড়া প্রতিষ্ঠানটি কেন গভীর সংকটে পড়লো তা খতিয়ে দেখার দাবি বীমা খাতের সংশ্লিষ্টদের। 

 


আরও পড়ুন