সৈয়দ আবুল হোসেন আলোকিত মানুষ

news paper

শামীম আহমদ

প্রকাশিত: ২-৬-২০২২ দুপুর ১১:৯

34Views

আজকের এই ঘুণেধরা, ক্ষয়ে যাওয়া সমাজটাকে পরিবর্তন করে মানুষের জন্য বসবাসযোগ্য করে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন আলোকিত মানুষ। এখন প্রশ্ন হলো এই আলোকিত মানুষ কারা? তাদের বৈশিষ্ট্যই বা কি? আমার মনে হয় আলোকিত মানুষ তারাই যারা জাতীয় জীবনের বিভিন্ন অঙ্গনে শক্তিমান নেতৃত্ব দিয়ে জাতিকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। যাদের নিরঅহংকার জ্ঞান, প্রজ্ঞা, সততা এবং কর্ম মানুষকে সত্যিকারের মানুষ হতে অনুপ্রাণিত করে তারাই আলোকিত মানুষ। আলোকিত মানুষ হতে হলে অবশ্যই ভালো মানুষ হতে হবে। ভালো মানুষ অন্তর থেকেই ভালো, তারা ভালো শুনে, তারা আপনাকে আনন্দ দেয়। আমরা ঠিক এমনই মানুষ হতে চাই। অন্তর থেকে কেউ ভালো মানুষ না হলে তার পক্ষে আলোকিত মানুষ হওয়া সম্ভব নয়। দার্শনিক সক্রেটিস আবার যেমন বলেছেন, ‘সদ্ব গুণই জ্ঞান’। অর্থাৎ অসৎ ব্যক্তি জ্ঞানী হতে পারে না। তাই সহজবোধ্যভাবে বলা যায়, আলোকিত মানুষের মধ্যে জ্ঞান, প্রজ্ঞা, সততা, পরোপকারীতা, বিনয়ী এবং সত্য সন্ধানের ইচ্ছাশক্তি থাকতে হবে।
 
সৈয়দ আবুল হোসেন অনেক বই লিখছেন। তিনি পীর আউলিয়া বংশের সন্তান। তার আলোয়ে বহু মানুষ আলোকিত হয়েছে। তার বই পরলে এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানা যাবে। আলোকিত মানুষের গুণাবলী অর্জনের জন্য বই পড়ার বিকল্প নেই। বই মানুষের মনের কালিমা দূর করে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করে। আলোকিত মানুষ গড়তে এবং সমাজ থেকে কুসংস্কার ও অজ্ঞানতার অন্ধকার দূর করতে বইয়ের বিকল্প নেই। চেতনার বিপ্লব ঘটাতে, নৈতিক ও মানসিক বোধ জাগ্রত করতে বইয়ের চাইতে সহায়ক আর দ্বিতীয়টি নেই। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) সর্বপ্রথম পবিত্র কোরআন এর যে বাণী শুনতে পেয়েছিলেন তাহলো, ‘আল্লামা বিল কলাম’ অর্থাৎ আল্লাহ মানুষকে জ্ঞান দান করেছেন, কলমের মাধ্যমে। আর কলমের আশ্রয়তো পুস্তকে। পবিত্র কোরআন মজিদে আরও বলা হয়েছে, ‘পড় তোমার রবের নামে, যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। ঘন্টা খানেকের জ্ঞান সাধনা সমগ্র রজনীর ইবাদতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। যে জ্ঞান মানুষের চরম লক্ষ্য। আর এই চরম লক্ষ্যে পৌঁছাতে গেলে বিদ্যা শিক্ষা বা বইয়ের বিকল্প নেই। বই আত্মাকে পরিপুষ্ট করে, জ্ঞানকে করে সমৃদ্ধ।আলোকিত মানুষ গড়তে বই মানুষের বুকের ভেতর সযত্নে লালন করা স্বপ্নের বাস্তব রূপ দিতে পারে। মানুষের স্বপ্ন যদি সুন্দর না হয়, তার ধ্যানধারণা, চিন্তাচেতনা, চলন-বলন, মনমনন যদি অন্যের থেকে সত্য ও বাস্তবময় না হয় তাহলে তিনি আলোকিত মানুষ হতে পারবেন না। আমাদের বর্তমান সমাজ যে ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে তার থেকে পরিত্রান পেতে হলে সমাজের আলোকিত মানুষগুলিকে সামনে এগিয়ে আসতে হবে। সামাজিক সভ্য সাংস্কৃতি আজ প্রায় ধ্বংসের মুখে। আমাদের তরুণ প্রজন্ম অস্থির সময় পার করছে। ভিন্ন সংস্কৃতির আগ্রাসনে দোলাচলে ভাসছে, বিভ্রান্ত হচ্ছে। ভালো-মন্দ বিচার করতে গিয়ে সংকটে পড়ছে। সঠিক পথ বেছে নিতে গিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের দিক নির্দেশক হতে পারেন আলোকিত মানুষগণ। সৈয়দ আবুল হোসেনের হাত ধরেই অনেক মানুষ তাদের জীবনের উন্নয়নের পথ উত্তরণ করছেন। তিনি উত্তরণের দিকনির্দেশক।
 
সৈয়দ আবুল হোসেন তার জীবনের অধিকাংশ সময় মানুষের কল্যাণে ব্যয় করছেন। আলেকজান্ডার দি গ্রেট উপলদ্ধি করতে পেরেছিলেন যে, পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হচ্ছে সময়, এবং জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে-মানুষের জন্য কিছু করা।’ বর্তমান এই অস্থির বকে যাওয়া সময়টাকে যদি সুস্থতার দিকে ফিরিয়ে আনা না যায় তাহলে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম যে অমানিশার ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জন্ম লগ্নে আরবের অবস্থা কতটা খারাপ ছিল তা আমাদের সকলেরই জানা। সেই সময় সেখানে সভ্যতা বলতে কোন কিছু ছিল না; মানুষের মুল্যবোধ বলতে কোন শব্দ ছিল না; নারীর মর্যাদা বলতে কিছু ছিল না। এমন এক ভয়ঙ্কর অন্ধকারে নিমজ্জিত সমাজকে মুহাম্মদ (সাঃ) তার নীতি আদর্শ এবং কোরআনের আলো দ্বারা সবচেয়ে বেশি আলোকিত করেছিলেন। তিনি যে আদর্শ রেখে গেছেন আমরা যদি তা ধারণ করে চলতাম তাহলে কিয়ামত পর্যন্ত এই সমাজে কোন অন্যায়, অবিচার, জুলুম- নির্যাতন হতো না। কালের পরিক্রমায় কত মানুষ যে এই পৃথিবীতে জ্ঞানের আলো নিয়ে এসেছেন তার হিসেব নেই। তারা আলো ছড়িয়ে গেছেন বলেই সমাজে এখনো কিছুটা সভ্যতার আলো দেখতে পাই। আমরা এ পৃথিবীতে সৃষ্টিকুলের শ্রেষ্ঠ জীব হয়ে জন্মেছি। ভুল-ত্রুটি নিয়েই আমাদের জীবন চলা। ভালো-মন্দ মিলিয়েই আমাদের বেঁচে থাকা। পৃথিবীর বিরাট জনসংখ্যার সব মানুষই আলোর সন্ধান পায় না। যারা পান তারা হয়ে ওঠেন সচেতন, বিবেকবান, নৈতিকতাসম্পন্ন, চারিত্রিক সৌন্দের্যে বলীয়ান। যারা ভালো, আদর্শবান, শ্রেষ্ঠ মানুষ তাদের জীবনের সৌন্দর্যের আলোতেই আলোকিত হয় পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রসহ গোটা বিশ্ব।
 
বর্তমানে গোটা পৃথিবী জুড়েই চলছে আধিপাত্যের যুদ্ধ, ধর্মে ধর্মে যুদ্ধ, দখল দারিত্বের যুদ্ধ, সম্পদ লুণ্ঠনের যুদ্ধ, বর্ণবৈষম্য, ভৌগোলিক আধিপত্য প্রদর্শনমূলক শক্তি প্রদর্শন, হত্যা নির্যাতন, খুন, ধর্ষণ ইত্যাদি। মুক্তির পথ দিনে দিনে রুদ্ধ হয়ে আসছে। অপরাজনীতি, অপ-সংস্কৃতির চরম দৌরাত্বে সমাজের বন্ধন ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাচ্ছে। রক্তের বন্ধন দিনে দিনে শীতলতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। বিবেকবান মানুষের পরিবর্তে রক্তচোষা মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ধনী-দরিদ্র্যের মধ্যে বৈষম্যের মাত্রা সীমানা অতিক্রম করে ফেলেছে। রাষ্ট্র সমাজের এই চিত্র দেখে মনে হয়, মানুষের কাছে মানুষের মূল্যই মনে হয় সবচেয়ে কম। অনেক রাষ্ট্র আছে যেখানে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে, খাদ্যের অভাবে কোটি কোটি মানুষ পুষ্টিহীনতায় ভুগছে, যুদ্ধ বিগ্রহই যেন তাদের নিত্যসঙ্গী। মানবিক নূন্যতম মর্যাদা তাদের নেই। অথচ বিবেকহীন বিশ্বের আধিপত্যে বিশ্বাসী রক্তপিপাসু রাষ্ট্রগুলোর নেতারা মানবতার দোহাই দিয়ে তারাই এমন কর্ম করে চলেছে।
 
আমরা যদি আমাদের (বাংলাদেশের) বর্তমান সমাজের দিকে লক্ষ্য করি তাহলে দেখতে পাব আমাদারে সমাজে নৈতিকতা হারিয়ে সমাজে এক বিরাট অস্থিরতা বিরাজ করছে। দেশে নব্য ধনীদের উত্থান, সেইসকল ধনী দরিদ্রের ব্যবধান ও আয় বৈষম্যের কারণে প্রান্তিক খেটে খাওয়া মানুষের জীবনমান আজ প্রায় বিধ্বস্ত। বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় মানুষের মনে আজ আর শান্তির সুবাতাস বয় না। মধ্যবিত্ত ও অল্প আয়ের মানুষের পক্ষে পরিবার পরিজনকে নিয়ে সম্মানের সঙ্গে টিকে থাকাই একরকম অসম্ভব হয়ে পড়েছে। মুক্ত বাজার অর্থনীতির যুগে যেখানে কিছু মানুষের ধনসম্পত্তি হুহু করে বাড়ছে, সেখানে বেশিরভাগ মানুষই অতি কষ্টে জীবন চালনা করছে। জীবন যুদ্ধে পিছিয়ে পড়া এসব মানুষ চারপাশের জৌলসময় জীবনধারার সঙ্গে ঠিক তাল মেলাতে পারছে না। অপমান, ব্যর্থতা ও লজ্জায় কেউ কেউ মাথা নত করে মেনে নিলেও বর্তমান প্রেক্ষাপটে অনেকের পক্ষেই সমাজের এই অপ্রত্যাশিত বৈষম্যের ভয়াবহতা মেনে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলশ্রুতিতে সৃষ্টি হচ্ছে অসহিষ্ণুতা ও  সামাজিক অস্থিরাতা যা আমাদের গোটা সমাজের সম্প্রীতিকে বিনষ্ট করছে। যার কারণেই আমরা দেখতে পাচ্ছি একের পর এক ভয়ঙ্কর ইস্যু তৈরী করে সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরী করে শত শত মানুষের সামনে মানুষকে কুপিয়ে হত্যা করছে অথচ কেউ রক্ষা করার জন্য এগিয়ে আসছে না। মানুষে মানুষে বিশ্বাসের জায়গাটা আজ এতটা সংকীর্ণ হয়ে গেছে যে, কেউ কারো কাছে নিরাপদ না। সন্তানও আজ তার পিতার কাছে নিরাপদ না, একজন ছাত্রীও তার স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের কাছে নিরাপদ না। প্রতিনিয়তই আমাদের সামনে বয়ে যাওয়া সমাজের খন্ড চিত্র নগ্নভাবে ধরা দিচ্ছে। শিক্ষা, সংস্কৃতিতে আমূল পরিবর্তনের কারণে আমাদের শিক্ষা নেওয়ার জায়গাটা আগের মত আদর্শবাদী জায়গায় নেই। কোনটি আদর্শ আর কোনটি অনাদর্শ তা নির্ণয় করার মত যোগ্যতা বোধ হয় আমাদের কাছ থেকে হারিয়ে গেছে। কারণ যারা আদর্শ চর্চা করার জন্য জনগণকে অনুপ্রাণিত করত তেমন আলোকিত ব্যক্তিত্ব আর আমাদের সমাজে নেই। সবচেয়ে বড় কথা হলো জ্ঞানী ও গুণী মানুষের কদর কমে যাওয়ায় যারা জ্ঞান চর্চা করেন তারা আর সমাজে উম্মোচিত হতে চান না। এটা একটি সুষ্ঠু সমাজ গঠনে বিরাট প্রতিবন্ধকতা। একটি দেশ একটি সমাজ এভাবে বেশি দূর এগোতে পারে না। এখানে অবশ্যই পরিবর্তন প্রয়োজন। সমাজকে এই অধঃপতনের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে প্রয়োজন আলোকিত মানুষের সংস্পর্শ।  
 
সৈয়দ আবুল হোসেন আলোকিত মানুষ এবং কিংবদন্তি রাজনীতিবিদ। তার চলন-বলন, মতাদর্শ-কার্যকলাপ, চিন্তাভাবনা, ধ্যানধারণায় আকাশছোঁয়া উচ্চতার ব্যক্তিত্ব। তিনি পাশ দিয়ে হেঁটে গেলেও বোঝা যেত কেউ একজন গেছেন। অথচ সেটা দাম্ভিকতা নয়, বরং ঈর্ষণীয় এক ব্যক্তিত্ব। বাংলাদেশের রাজনীতির সংকটকালীন মুহূর্তে সৈয়দ আবুল হোসেন আওয়ামী লীগের হয়ে সংকট নিরসনে কাজ করে গেছেন একনিষ্ঠভাবে। মানুষের হৃদয়ের কাছাকাছি যাওয়ার মতো বিনয়ী এবং উদার একজন মানুষ তিনি। বাংলাদেশের রাজনীতির মঞ্চ সবসময়ই উত্থান-পতনের নাটকীয়তা আর স্বার্থোদ্ধারের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে টানটান উত্তেজনায় পরিপূর্ণ। এই মঞ্চে যেই এসে দাঁড়ায় রাজনৈতিক স্বার্থোদ্ধারের প্রচেষ্টায় তার প্রকৃত মুখোশ উন্মোচিত হয়ে যায়। কেউ কেউ পদের গরিমায় ধরাকে সরা জ্ঞান করেন, কেউ নিজ স্বার্থ হাসিলের একাগ্রতায় ভুলে যায় যে, বঙ্গবন্ধুর তিল তিল শ্রমে গড়া রাজনীতির অঙ্গনেই দাঁড়িয়ে আছে সবাই। সৈয়দ আবুল হোসেন সেই জায়গায় ব্যতিক্রম এবং নিজস্ব মহিমায় অনবদ্য। নিজের কাজটি একনিষ্ঠভাবে করেন। সৎ-নির্লোভ হিসেবে তার ছিল অগাধ সুনাম। আত্মপ্রচার বিমুখ তিনি। বিভিন্ন সময় দলীয় গুরুত্বপূর্ণ দ্বায়িত্বে থেকেও অহমিকা কিংবা স্বেচ্ছাচারিতা তাকে স্পর্শ করেনি। 
 
সৈয়দ আবুল হোসেন খুব জোর দিয়ে বলেন, রাজনীতি করতে চাইলে দুর্নীতি করা যায় না। আর দুর্নীতি করলে রাজনীতি করা যায় না। রাজনীতিতে অশুভ শক্তির চর, সন্ত্রাসী, মাদকসেবী, অসৎ ও বিতর্কিত ব্যক্তির অনুপ্রবেশ না ঘটে, সে ব্যাপারে তিনি যেমন সচেষ্ট, তেমনি দলের অন্যদেরও সতর্ক করতেন। সৈয়দ আবুল হোসেন রাজনীতি সৎ মনস্ক ব্যক্তি। তিনি অযাচিত অহেতুক আস্ফালনে বিশ্বাসী ছিলেন না, তিনি কর্ম দিয়ে জয় করে গেছেন বাংলাদেশের রাজনীতির মঞ্চ। আশ্চর্যরকমভাবে গণমাধ্যমের প্রতি আকর্ষণহীন ছিলেন সৈয়দ আবুল হোসেন। কখনোই প্রচার প্রচারণার জন্য ব্যতিব্যস্ত ছিলেন না। দলের নেতা-কর্মীদের আস্থাভাজন ও বিশ্বাস-ভরসার স্থল ছিলেন তিনি, এমনকি গণমাধ্যমসহ সব শ্রেণি ও পেশার মানুষেরও। সবার সাথেই হাসিমুখে কথা বলতেন। পত্রিকা বা গণমাধ্যমে তার সমালোচনা থাকলেও তিনি নিজে সে বিষয়ে কারো প্রতি কখনো বিরূপ হননি। রাজনীতির কঠিন সময়ে স্রোতের প্রতিকূলের যাত্রী ছিলেন সৈয়দ আবুল হোসেন। যখন দেখি রাজনীতির মাঠে ময়দানে চারপাশে লোভ, মোহে, ভোগ-উপভোগ-সম্ভোগে উন্মাদ হয়ে উঠছে তখন আপোষ, লোভ, অসততা-অনৈতিকতা থেকে বহুদূরে অবস্থান নিয়েছেন তিনি। তাই আমি বলি সৈয়দ আবুল হোসেন সততা ও ত্যাগের জন্য উদাহরণ। আবুল হোসেনের আদর্শ বেঁচে থাকবে চিরকাল। যা মানবতাকে জাগ্রত করবে। বঙ্গবন্ধু, জাতীয় চার নেতা এবং মুক্তিযুদ্ধের আদর্শই যেন আবুল হোসেনের আদর্শ। রাজনীতির অন্যতম শুদ্ধ পুরুষ আবুল হোসেনের সামগ্রিক জীবনকে নতুন প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দিতে দল, রাষ্ট্র ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগ নেয়া দরকার। আবুল হোসেন একজন সত্যিকারের মুমিন লোক। সততা মুমিনের অনেক বড় গুণ। সততার পুরস্কার দেবেন মহান আল্লাহ। সত্যবাদীদের প্রশংসা ও গুণাবলি উল্লেখ করে কুরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ সত্যবাদীদের পুরস্কৃত করেন, তাদের সত্যবাদিতার জন্য এবং তাঁর ইচ্ছা হলে মুনাফিকদের শাস্তি দেন অথবা তাদের ক্ষমা করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। কেয়ামতের দিন সততার কারণে জান্নাত মিলবে সত্যবাদীদের। আল্লাহতায়ালা বলবেন, ‘এই সেই দিন যেদিন সত্যবাদীরা তাদের সততার জন্য উপকৃত হবে, তাদের জন্য আছে জান্নাত যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত। তারা সেখানে চিরস্থায়ী হবে; আল্লাহ তাদের প্রতি প্রসন্ন এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট; এটা মহাসফলতা। সততা অবলম্বকারীদের জন্য মহানবী (সা.) সুপারিশ করবেন। সততার প্রশংসা করে মহানবী (সা.) বলেন, ‘আমার সুপারিশ তার জন্য যে সাক্ষ্য দেবে আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। এমন নিষ্ঠার সঙ্গে যে-তার অন্তর তার মুখকে সত্যায়ন করবে এবং মুখ অন্তরকে সত্যায়ন করবে। তারা কি জানে মিথ্যার পরিণতি কি হবে? চিন্তা করে দেখতে হবে জীবনের বাঁকে বাঁকে আমরা কত মিথ্যার কী পরিমাণ আশ্রয় নিচ্ছি। সততা থেকে আমরা কত পিছিয়ে। তাই সব সময় কথা ও কাজে সততা ও স্বচ্ছতার পরিচয় দেওয়া এবং মিথ্যার অভিশাপ গ্লানি থেকে বেঁচে থাকা জরুরি। এতে দুনিয়া ও আখিরাতে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে উপযুক্ত বিনিময় মিলবে।

আরও পড়ুন