অবৈধ সম্পদ অর্জন : দুদকের অগ্রাধিকার তালিকায় তারেক-জোবায়দার মামলা

news paper

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৮-৬-২০২২ দুপুর ১০:৪১

3Views

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অগ্রধিকারভিত্তিতে বেশ কয়েকটি হাইপ্রোফাইল মামলা নিষ্পতির উদ্যোগ নিয়েছে। এরমধ্যে কয়েকটি মামলা তদন্তাধীন এবং বেশকিছু মামলা রয়েছে বিচারাধীন। বিচারাধীন মামলার মধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলাটি রয়েছে।

জানা গেছে, এক-এগারোর সময় তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করা হয়। এতে তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান ও শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

নানা আইনি জটিলতায় আটকেছিল মামলাটি। সম্প্রতি হাইকোর্ট তাদের সম্পদের মামলার বৈধতা প্রশ্নে তিনটি রিট ও রুল খারিজ করে দেয়। পাশাপাশি নিষ্পত্তির আদেশও দেয় আদালত। ১৪ বছর ধরে ঝুলে থাকা এ মামলায় তারেক ও জোবায়দাকে পলাতক আসামি হিসেবে মামলার নথিতে উল্লেখ রয়েছে। পাশাপাশি তারেক-জোবায়দাকে ‘পলাতক’ বিবেচনা করে তাদের পক্ষে কোনো আইনজীবী এ মামলা পরিচালনা করতে পারবে না বলে গত রোববার রায় দিয়েছে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

আদালতে তারেক-জোবাইদার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন ও কায়সার কামাল। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

অপরদিকে, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, মানি লন্ডারিং মামলা এবং জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজা পরোয়ানা ঝুলে আছে। দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ইন্টারপোলের মাধ্যমে ওই মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের আনার চেষ্টা চলছে। ওই তিন মামলা তার অনুপস্থিতিতে শেষ করে প্রসিকিউশন। এছাড়া ওই তিন মামলার মধ্যে দুটিতে খালেদা জিয়াও সাজাপ্রাপ্ত।

খুরশীদ আলম খান জানান, তারেক রহমানের দুটি রিট এবং জোবায়দা রহমানের একটি রিটের রুল খারিজ করে দিয়েছে আদালত। স্থগিতাদেশও প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। তারেক রহমান যেহেতু একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ তিনটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, বিষয়টি আদালতে আমরা উপস্থাপন করেছি। এই তিনটি মামলার ওপর ভিত্তি করে এবং তার বর্তমান অবস্থা বিবেচনা করে আইনের দৃষ্টিতে তারেক রহমান পলাতক বলে রায় দিয়েছে আদালত। আত্মসমর্পণ না করা পর্যন্ত তারা কোনো আইনি সহায়তা পাবেন না। বিচারকাজ নিজস্ব গতিতে চলবে।

২০০৭ সালে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী পৃথক রিট আবেদন করেন। রিটে জরুরি আইন ও এ মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেন তারা। হাইকোর্ট রুল জারি করে স্থগিতাদেশ দেয়। এরপর রিট মামলাগুলো ১৯ এপ্রিল কার্যতালিকায় আসে। পরে রুল শুনানির জন্য দিন ঠিক করে হাইকোর্ট।

অন্যদিকে, একই মামলার বৈধতা নিয়ে আরেকটি ফৌজদারি আবেদন করেছিলেন তারেকের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান। ওই সময় করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেছিল হাইকোর্ট। ওই রুলের শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রায় দেয় হাইকোর্ট। রায়ে মামলা বাতিলে জারি করা রুল খারিজ করে দেয়। একই সঙ্গে জোবায়দা রহমানকে আট সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন জোবায়দা রহমান। গত ১৩ এপ্রিল আপিল বিভাগ জোবায়দার এ আবেদন খারিজ করে আদেশ দেয়। এরপর ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়।


আরও পড়ুন