রেঞ্জ দিয়ে পদ্মা সেতুর নাট খুলে ভিডিও বানায় মাহদি : সিটিটিসি

news paper

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৩০-৬-২০২২ দুপুর ৪:৫২

4Views

ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)-এর প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন,  রেঞ্জ দিয়ে পদ্মা সেতুর নাট খুলে ঢিলা করে পরে হাত দিয়ে খোলার ভিডিও বানায় মাহদি হাসান (২৭)। উদ্দেশ্যমূলকভাবে নাট খোলার জন্যই সে সঙ্গে করে রেঞ্জ নিয়ে গিয়েছিলেন। বুধবার (২৯ জুন)  রাতে লক্ষ্মীপুর থেকে মাহদিকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসি। এ সময় তার কাছ থেকে নাট খোলার ভিডিও ধারণে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি জব্দ করা হয়।

মো. আসাদুজ্জামান জানান, মাহদি এক সময় ছাত্রশিবিরের সদস্য ছিলেন। তার বাড়ি মুন্সীগঞ্জে। তিনি তামিরুল মিল্লাত নামে একটি মাদ্রাসা থেকে দাখিল ও আলিম পাস করেন। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) রাজধানীর মিন্টো রোডে অবস্থিত ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিটিটিসি প্রধান।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পরের দিন যখন সবার জন্য সেতু উন্মুক্ত করা হয় সে দিন মাহদি রেঞ্জ নিয়ে সেখানে যায়। সে রেঞ্জ দিয়ে সেতুর নাট-বল্টু খোলে। সে নাট-বল্টু খোলার পরিকল্পনা করেই সেতুতে যায়।

সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান জানান, গ্রেপ্তার মাহদি তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসার ছাত্র ছিলেন। সেখানে ছাত্র অবস্থায় তিনি শিবিরের কর্মী ছিলেন। ওই মাদ্রাসা থেকে দাখিল-আলিম পাসের পর কবি নজরুল কলেজে ভর্তি হন। রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে তিনি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি। তবে পড়াশোনা না করলেও তিনি গ্রামের বাড়িতে থাকতেন না, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে থাকতেন।

সিটিটিসির এই কর্মকর্তা বলেন, পদ্মা সেতুর এই সাফল্যকে ছোট করা এবং জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য একটি মহল চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ২৬ জুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মাহদি হাসান পদ্মা সেতুর রেলিংয়ের নাট-বল্টু খুলে আবার লাগিয়ে দিচ্ছে।

সিটিটিসির সাইবার ইন্টেলিজেন্স বিভাগের নজরদারির ধারাবাহিকতায় লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ এলাকা থেকে মাহদিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে পদ্মা সেতু উত্তর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সরকারের সাফল্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে মাহদি এই কাজ করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঘটনার আগের রাতে মাহদি তার সঙ্গীদের নিয়ে পদ্মা সেতুতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। ২৬ জুন সেতুতে যান চলাচল শুরু হওয়ার দিন ভোরে মাহদি সঙ্গীদের নিয়ে মাওয়া প্রান্ত থেকে সেতু পার হয়ে ওই পারে যান। তারা এমন ঘটনার জন্য সুযোগ খুঁজতে থাকেন, কিন্তু মানুষজন বেশি থাকায় তারা সেটা পারছিলেন না। এরপর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে অপর প্রান্ত থেকে ফেরার সময় মাওয়া প্রান্তে এসে সেতুর রেলিংয়ের নাট খুলে ভিডিও করেন মাহদি।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, মাহদি ভিডিওতে বলছিলেন- ‘আমি কিন্তু রেঞ্জ ব্যবহার করছি না’। তিনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে আপত্তিকর রেঞ্জ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাহদি স্বীকার করেছেন, রেঞ্জ দিয়ে প্রথমে নাট খুলে লুজ করে পরে হাত দিয়ে খুলে ভিডিও বানানো হয়।

উদ্দেশ্যমূলকভাবে সরকারের সাফল্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে মাহদিসহ তার সঙ্গীরা সেতুর নাট খুলতে রেঞ্জ নিয়ে গিয়েছিলেন। আমরা মাহদির সঙ্গীদের খুঁজছি, তাদের গ্রেপ্তার করা গেলে হয়তো নাট খোলায় ব্যবহৃত রেঞ্জটি উদ্ধার করা সম্ভব হবে। মাহদিকে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের আর কোনো উদ্দেশ্য ছিল কি-না তা জানা যাবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আমাদের নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়কে কেন্দ্র করে যাতে কেউ কোনো অপতৎপরতা চালাতে না পারে, সে বিষয়ে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সেতু এলাকায়ও আমাদের সার্ভিলেন্স রয়েছে।


আরও পড়ুন