বিজয় স্মরণে- মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আলেখ্য অনুষ্ঠান, ক্যারি, নর্থ ক্যারোলিনা, যুক্তরাষ্ট্র

news paper

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৭-১২-২০২২ দুপুর ২:৩৪

5Views

সম্প্রতি বাংলাদেশ লিবারেশন ওয়ার হিস্ট্রি প্রিজার্ভেশান নেটওয়ার্ক, সম্প্রীতি ফোরাম ও ট্রিভূজ সঙ্গীত সংগঠনের উদ্যোগে নর্থ ক্যারোলাইনার ক্যারিতে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণ সম্প্রচার বিষয়ক একটি অনবদ্য অনুষ্ঠান । 

অনুষ্ঠানে ছিল আলোচনা, শিশু কিশোরদের ‘মুক্তিযুদ্ধের মানে কি’ শীর্ষক অনুষ্ঠান, গণসঙ্গীত ও নাটকের আন্তরিক ও সরব উপস্থাপনা। আয়োজকরা বলেছেন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধ করার জন্যই এই অনুষ্ঠানমালার আয়োজন। অনুষ্ঠানটির শুরুতেই আলোচনা পর্বে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা, লেখক ও বিজ্ঞানী ড. নুরুন নবী, যিনি ১৯৭১ সালে একজন তরুণ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যুদ্ধ করেছেন।

একাত্তরের ২৫ শে মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহনীর যে আক্রমণ শুরু হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তদানীন্তন ছাত্র নুরুন নবী অন্যদের নিয়ে তাতে বাধা দানের প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। শাহবাগের মোড়ে এই বাধা দেয়ার সময়ে তাঁরা পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সরাসরি হামলার মুখোমুখি হন। তিনি এবং অন্যান্যরা সেই সময়ে পাকবাহিনীর আক্রমণের প্রথম শিকার হন। 

ড. নুরুন নবী মনে করেন এই ঘটনার কারণে তিনি এবং তাঁর সাথে থাকা অন্যান্যরা সম্ভবত ২৫ শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী দ্বারা প্রথম আক্রান্ত হন। ড. নবী মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের বিকৃতি এড়াতে এবং নতুন প্রজন্মের কাছে তা পৌঁছে দিতে অভিভাবকদের আরও সক্রিয় হতে হবে।

অনুষ্ঠানের অপর বক্তা ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক, বেতার সাংবাদিক, লেখক ও কবি আনিস আহমেদ। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অবিকৃত ভাবে সংরক্ষণ করা সম্পর্কে আনিস আহমেদ তাঁর বক্তব্যে বলেন বিশেষত এখন যখন সেই প্রজন্ম সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করছেন যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের সময়ে জন্মাননি কিংবা জন্মালেও তাঁরা ছিলেন খুব ছোট এবং মুক্তিযুদ্ধের কথা তাঁরা শুনেছেন তাঁদের বয়োজ্যেষ্ঠদের কাছ থেকে তাই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে তাদের সামনে এবং পরবর্তী প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার প্রয়োজন অস্বীকার করা যায় না। 

তিনি আরও বলেন সময় যতটা বয়ে যাচ্ছে , ইতিহাস বিকৃতির আশংকা ততটাই বাড়ছে। রাজনৈতিক বিভাজন যে জাতীয় পরিচিতির বিষয়ে অনাকাঙ্খিত বিতর্কের সৃষ্টি করতে পারে সেই সব কারণে অবিকৃত ভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে জনসমক্ষে আনতে হবে। অনুষ্ঠানের পরবর্তী পর্বে শিশু -কিশোররা বাংলাদেশে, মুক্তি ও স্বাধীনতা সম্পর্কে তাদের অনুভূতি পাঠ করে এবং বাংলা কবিতা আবৃত্তি করে। আল আমিন বাবুর পরিচালনায় সঙ্গীত পরিবেশন করেন নর্থ ক্যারোলাইনার স্থানীয় শিল্পীরা।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে ছিল মনোজ কুমার সেনের লেখা এবং ড. এবিএম নাসির পরিচালিত নাটক রাজাকারের কিসসা।রাজাকারের কিসসায় মূলত এ কথাই বলা হয়েছে যে এখনও রাজকাররা মনে করে একাত্তরে তারা যে অপকর্ম করেছিল সেটা ঠিকই ছিল এবং তাদের দল ভারি করার চেষ্টা করে নব্য মুক্তিযোদ্ধাদের মাধ্যমে। নাটকে বীরাঙ্গনাদের ভূমিকা ছিল মর্মস্পর্শী এবং সুশীল সমাজের নামে যারা যুদ্ধাপরাধীদের অপরাধকে লঘু করার চেষ্টা করেন তাদের কথাও।
অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন ড. এবিএম নাসির।


আরও পড়ুন