ধারাবাহিক পর্বের আজ দ্বিতীয় পর্ব 

ওজিফা খাতুন রুবি ওরফে রুবি খাতুন যেভাবে হয়েছেন কোটিপতি

news paper

নিজাম উদ্দিন

প্রকাশিত: ৭-১২-২০২২ দুপুর ২:৩৮

13Views

রুবি খাতুন ওরফে ওজিফা খাতুন রুবি সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে হয়েছেন কোটিপতি ।বিলাসী জীবন, রংপুর ঢাকা এবং চট্টগ্রাম যাতায়াত করেন বিমানে।সরেজমিনে ওজিফা খাতুন রুবির বিষয়ে কক্সবাজার নাইক্ষ্যংনছড়ি থেকে রংপুর গিয়ে খবর সংগ্রহ  করা হয়।

সূত্রে জানা যায় ২০০৬ সালে কক্সবাজার নাইক্ষ্যংনছড়ির ছেলে সুরত আলমের সহিত বিবাহ করার পর নাইক্ষ্যংছড়িতে সংসার জীবন শুরু করিলে ক্ষমতার উৎসকারী হিসাবে প্রথমতঃ সে নিজেকে তারেক জিয়ার বান্ধবী, সাবেক পুলিশের আই জি পি নুর মোহাম্মদ এর ভাতিজি, ডি আই জি (রাজশাহী রেজ) এর ভাতিজী এবং হাওয়া ভবন ও সচিবালয়ের মানুষ হিসাবে পরিচয় দিয়ে নিজের অবস্থান তৈরী করে নেয় এবং  শুরু হয় বিভিন্ন ভাবে অবৈধ অর্থ লেনদেন ও চেক প্রতারণা। 

প্রথমতঃ প্রতারণা করেন আঃ মমিনের সাথে।  
আঃ মমিন এর কাছ থেকে ৩০,০০০/- টাকা নিয়ে: ১৫-০৬- ২০০৮ ইং তারিখে চেক দিয়েছিল রুবি। দ্বিতীয়ত ওমর শরীফ এর নিকট থেকে ১,৯২,০০০ টাকা নিয়ে ৩০-১২- ২০০৮ ইং তারিখে চেক দিয়েছিল। তৃতীয়ত বদরুল আলম এর নিকট থেকে ৬০,০০০/ টাকা ও পরে আরও  ৩0,000/- টাকা নিয়ে ২৯-০১-২০০৯ এবং ১২-০৮-২০০৯  ইং তারিখে চেক দিয়েছিল রুবি  এবং হাসিনা বেগম এর নিকট থেকে ২২,০০০/- টাকা নিয়ে ২২-০৪-২০০৯ ইং তারিখে চেক  দিয়েছিল রুবি। উক্ত চেকগুলি সব ডিজঅর্নার হলে ওমর শরীফ এবং হাসিনা বেগম মামলা করেছিল। তার বিরুদ্ধে এমন চেক প্রদানে আরও অনেক ভুক্তভোগি আছে কিন্তু কেউই রুবির ক্ষমতার ও দাপটে  এবং ভুক্তভোগীদের উল্টো মামলার ভয় দেখালে রুবির বিরুদ্ধে তারা প্রতিবাদ করার সাহস পায় নাই। রুবিকে ভুক্তভোগীরা ভয় পায় কারণ রুবি খাতুন কারণে অকারণে একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে রংপুর জেলায় একাধিক মিথ্যা ও হয়রানীর  মামলা দিয়েছিলো।

বিদেশে লোক পাঠানোর নামে প্রতারণা 

সূত্রে জানা যায় রুবি আলম, বিদেশে লোক পাঠানের নামে অনেক গরীর যুবকের নিকট থেকে ৩-৪ লক্ষ করে টাকা নিয়েছিল। কিন্তু বিদেশে পাঠাতে পারেন নাই।

বিদেশ পাঠানোর প্রতারণার ফাঁদে পড়েছিল এমনি একজন হলেন শফিকুল ইসলাম তার কাছ থেকে ২,৩০,০০০/- টাকা নিয়েছিল রুবি আলম ওরফে ওজিফা খাতুন রুবি।পরবর্তীতে শরিফুলকে, রুবি আলম ওরফে ওজিফা খাতুন রুবি টাকা পরিশোধের অঙ্গীকারনামা করে দলিল দিয়েছিল। অপরজন হলেন ওয়াহাব মিয়া, তার পিতা মহির উদ্দিন তার নিকট থেকে ৩,২০,০০০/ টাকা নিয়েছিল।

উক্ত টাকা পরিশোধের জন্য চেক প্রদান করিলে তাহা ডিজঅনার হইলে মহির উদ্দিন রুবি আলম ওরফে ওজিফা খাতুন রুবির বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। অনুরুপভাবে রুবি খাতুন তার নিজ জেলা রংপুর থেকে বহু ছেলেকে বিদেশ পাঠানোর নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কিন্তু বিদেশে পাঠাতে পারেনি। 

চেক প্রতারণা ও বিদেশে পাঠানোর নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। শিরোনামে নিউজ করে ছিলো চট্টগ্রামের স্থানীয় সংবাদিকরা। গত ১৩-১১-২০০৯ ইং তারিখে "চট্টগ্রাম মঞ্চ" পত্রিকার, ০৩/০২/২০১০ এবং ০৩/০২/২০১০ ইং তারিখে দৈনিক নতুন বাংলাদেশ" পত্রিকায়, ২৭-০৮-২০১০ এবং ০৩-০৯-২০১০ ইং তারিখে চট্টগ্রাম ও সমুদ্র বার্তা" ও "চট্টগ্রাম মঞ্চ" পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়েছিল যার শিরোনাম ছিল "চেক জালিয়াতির মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ এবং বিদেশে মানুষ পাঠানোর নাম করে হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা" এমনিভাবে রুবি আলম ওরফে ওজিফা খাতুন রুবি কোটিপতি ও ক্ষমতাধর নারী হিসাবে প্রতিষ্ঠত হয়েছিল কক্সবাজার নাইক্ষ্যছড়ি উপজেলায়।

 এ ব্যাপারে তার সাবেক স্বামী সুরত আলম একটি অভিযোগও দায়ের করেছিল। নাইক্ষ্যছড়ি উপজেলায় সরেজমিনে তদন্ত করিলে সেখানকার জনসাধারণ রুবি আলমের উপরোক্ত কর্মকান্ডের ইতিহাস সকালের সময়র প্রতিনিধিকে অকপটে জানান। সাবেক স্বামী সুরত আলমের  মুঠোফোনে যোগাযোগ করিলে তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন ওজিফা খাতুন রুবি কোন লেখাপড়া জানেন না, ঢাকায় বাড়ীর মালিক বলে আমাকে প্রতারণা করে বিয়ে করেছে। তিনি  একজন উন্নত মানের প্রতারক। আমার একাউন্ট থেকে ১৯ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। 

কক্সবাজার নাইক্ষ্যছড়িতে রুবির বিষয় খবর সংগ্রহ করতে গেলে  আরও এক ভুক্তভোগীকে পাওয়া যায় তার নাম মোঃ ইসলাম উদ্দিন, তার নিজ জেলা রংপুর তিনি চাকরি করতেন সুপ্রিম কোর্টে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে (appellate Division)  তার সাথেও করেছে ব্যাপক প্রতারণা। রুবি খাতুন ওরফে ওজিফা খাতুন রুবি নাইক্ষ্যছড়িতে যখন একাধিক প্রতারণা করে রোষানলে পরে তখন ইসলাম উদ্দিনের ঢাকার বাসায় আশ্রয় নেন এবং তাকে কক্সবাজার গিয়ে তার সমস্যা সমাধান করে দিতে বলেন। তিনিও কক্সবাজার নাইক্ষ্যছড়িতে গিয়ে একটি মামলা করে দেন রুবির পক্ষে। ইসলাম উদ্দিন চিন্তা করছেন যেহেতু তারই গ্রামের মেয়ে সেহেতু তাকে একটু সহযোগিতা করাই দ্বায়িত্ব। তৎকালীন সময় রুবি খাতুন ইসলাম উদ্দিনের নাম ফুটিয়ে অনেক অনিয়মকরে আধিপত্য বিস্তার করে যা ইসলাম উদ্দিন ঢাকায় থেকে কিছুই জানতেন না। রুবি খাতুন ওরফে ওজিফা খাতুন  নাইক্ষ্যছড়িতে বলে বেড়ায় সুপ্রিম কোর্টে তার আপন ভাই চাকরি করেন। তিনিই মুলত ইসলাম উদ্দিন সাবেক সুপ্রিম কোর্টের Appellat Division কর্মকর্তা ছিলেন।

পরবর্তীতে সেই ইসলাম উদ্দিনের সাথেও প্রতারণা করে রুবি।  (ইসলাম উদ্দিন)ভদ্রলোককে রুবি খাতুন তার বাড়ীর অর্ধেক অংশ মালিকানা দেওয়ার কথা বলে প্রায় ৩০ (ত্রিশ) লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

গত ১৮/০২/২০১০ তারিখে ইসলাম উদ্দিনের কাছে বিক্ররির কথা বলে,রুবির বাড়ির ২য় তলা ও ৩য় তলা করার জন্য তার কাছে ২০১১ সাল থেকে এস এ পরিবহনের মাধ্যমে নগন ও (হাতে হাতে) দলিলের টাকাসহ প্রায় ৩০ (ত্রিশ) লক্ষ টাকা নিয়েছে কিন্তু রুবি তার ক্ষমতার দাপটে তাকে বাড়ীর দখল দিচ্ছে না এবং টাকাও ফেরত দিচ্ছে  না। ইসলাম উদ্দিনের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয় কথা হয় রুবির কেয়ারটেকার আলমের  সাথে। তিনি এ ব্যাপারে বলেন ইসলাম সাহেব ঢাকা থেকে ওজিফা খাতুন রুবির নামে, টাকা পাঠালে, আমিই সেই টাকা তুলতাম। ওজিফা খাতুন রুবির এস এ পরিবহনে ফোন দিলে আমি তার পরিবর্তে  টাকা তুলেছি টাকার পরিমাণ জানতে চাইলে তিনি বলেন আটাশ থেকে ত্রিশ লক্ষ টাকা ইসলাম সাহেবের তুলেছিলাম। ইসলাম উদ্দিন যেহেতু এখন আর সরকারি কর্মকর্তা নেই এর সুযোগে সাবেক এই সরকারি কর্মকর্তাকে মামলা হামলার হুমকি দিয়ে আসছেন ওজিফা খাতুন রুবি। 

ওজিফা খাতুন রুবির আরেক প্রতারণার কৌশল কনজুমার প্রডাক্ট ব্যবসা নিয়ে। রুবি ফুডের নামে ও রুবি কনস্ট্রাকশনের নামেও রয়েছে একাধিক প্রতারণা। পরবর্তী পর্বে আরও প্রতারণার ধারাবাহিক পর্ব প্রকাশিত হবে।

সূত্রে জানা যায় ২০০৬ সালে কক্সবাজার নাইক্ষ্যংনছড়ির ছেলে সুরত আলমের সহিত বিবাহ করার পর নাইক্ষ্যংছড়িতে সংসার জীবন শুরু করিলে ক্ষমতার উৎসকারী হিসাবে প্রথমতঃ সে নিজেকে তারেক জিয়ার বান্ধবী, সাবেক পুলিশের আই জি পি নুর মোহাম্মদ এর ভাতিজি, ডি আই জি (রাজশাহী রেজ) এর ভাতিজী এবং হাওয়া ভবন ও সচিবালয়ের মানুষ হিসাবে পরিচয় দিয়ে নিজের অবস্থান তৈরী করে নেয় এবং  শুরু হয় বিভিন্ন ভাবে অবৈধ অর্থ লেনদেনকরে চেক প্রতারণা। 

 


আরও পড়ুন