খাদ্য অধিদপ্তরে দুর্নীতি: একই জায়গায় ৩২ বছর

news paper

নজরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশিত: ৭-১২-২০২২ রাত ৮:৫৪

85Views

চট্টগ্রাম জেলা ও বিভাগীয় খাদ্য অফিসের ৮ জন গাড়ি চালক কয়েক যুগ ধরে একই স্থানে কর্মরত থাকায়, সরকারি খাদ্য অধিদপ্তরের চাল, গম সরবাহ করতে গিয়ে কৌশলে পাচার, চুরি, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ওঠেছে। চট্টগ্রাম জেলা ও বিভাগীয় খাদ্য কর্মকর্তার সাথে সখ্যতা থাকায় তাদের বদলী করা হচ্ছে না। একটি অসাধু চক্রের সাথে জড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ার তথ্যও পাওয়া গেছে।

সম্প্রতি খাদ্য অধিদপ্তর থেকে বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা, অফিসে নির্দেশনা দেন ২ বা ৩ বছরের অধিক যারা একই স্থানে কর্মরত রয়েছে তাদের দ্রুত বদলী এবং স্বামী স্ত্রী উভয় চাকুরীজীবী হলে তাদেরকে পাশ্ববর্তী জেলায় বদলী করার জন্য ২০১৯ সালের ৯ জানুয়ারি একটি পরিপত্র জারি করেন। এরকম কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলী করে মহাপরিচালকের কাছে অনুলিপি পাঠানোর নির্দেশ দেন। মহাপরিচালকের আদেশ অমান্য করে এবং খাদ্য অধিদপ্তরের নীতিমালা অমান্য করে কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী দীর্ঘদিন ধরে একই পদে বহাল রয়েছে।

এরমধ্যে ১৯৯৮ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে গাড়ি চালক মো. মামুন হোসেন ২৫ বছর ধরে কর্মরত। রনজিত দে নামের আরেক গাড়ি চালক ২০০৭ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ১৫ বছর, বি-বাড়িয়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের গাড়ি চালক মো. হানিফ মিয়া ২০০৮ সাল থেকে ১৫ বছর, কুমিল্লা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের গাড়ি চালক জাকির হোসেন ২০১৬ সাল থেকে, চট্টগ্রাম সাইলোর গাড়ি চালক জামাল আহমদ ২০১১ সাল থেকে ১১ বছর, খাগড়াছড়ি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের গাড়ি চালক শান্তি বিকাশ চাকমা ১৯৯০ সাল থেকে ৩২ বছর, রাঙ্গামাটি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের গাড়ি চালক বদিউল আলম ২০১০ সাল থেকে ১২ বছর ধওে একই জায়গায় কর্মরত আছেন। এরমধ্যে গাড়ি চালক মোহাম্মদ হোসেন ও  রনজিত দে প্রভাব খাটিয়ে অন্য জেলা থেকে বদলী হয়ে আসলেও তাদেরকে জোর পূর্বক চট্টগ্রামে কাজ করতে দেয়া হয়না বলে অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়া রনজিত দে চট্টগ্রামে জেলায় হলে তার স্ত্রী শিপ্রা দে দেয়ানহাট সিএসডিতে নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে দায়িত্বে রয়েছে। তারা কর্মকর্তাদের গাড়ি চালক হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। খাদ্য অফিসের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাথে খাদ্য পরিবহনের চালকদের সাথে সখ্যতা থাকায় প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার সরকারি চাল, গম পাচার করে আসছে। খাদ্য অফিসের কর্মকর্তাদের সাথে কোন ঠিকাদারদের মধ্যে সর্ম্পক খারাপ হলে তাদের সিন্ডিকেটের গাড়ি চালকদের দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয় বলে খাদ্য পরিবহন ঠিকাদার সমিতির একাধিক নেতার অভিযোগ।

এব্যপারে চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য কর্মকর্তা আব্দুল কাদের জানান, যারা আমাদের গাড়ি চালক তারা ঠিকমতো তাদের পরিবারকে পর্যন্ত সময় দিতে পারে না, ব্যক্তিগতভাবে আমার গাড়ি চালক কোন অপকর্মের সাথে জড়িত খাকার সুযোগ পাবে না, আমি সব সময় নজরদারিতে রাখি। অন্যদের বিষয়ে আমি বলতে পারব না, তবে সরকারি নিয়ম মোতাবেক একই স্থানে দীর্ঘদিন থাকার বিষয়টি উচিত না ড্রাইভারদের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন।

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক জহিরুল ইসলাম খান বলেন, সাধারণত কোন গাড়ি চালকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ না আসলে তাদের বদলী করা হয় না। যদি কারো বিরুদ্ধে কোন অনিয়ম অপরাধের সাথে যুক্ত থাকার প্রমান পাওয়া যায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।


আরও পড়ুন