এক বসন্ত উৎসবে বদলে গেল জীবনের বাঁক

news paper

ফয়েজ রেজা

প্রকাশিত: ১৫-১-২০২৩ রাত ১০:২৯

68Views

সফলতা হলো জীবনের সুখ বা দুঃখবোধের মতো। পরিমাপ করা যায় না। আপনি যদি ভাবেন সুখে আছেন, তাহলে আপনি পৃথিবীর সেরা সুখি মানুষ। আর যদি ভবেন সুখ নেই, তাহল আপনাকে সুখি করা যাবে না পৃথিবীর সেরা বস্তু দিয়ে। মনোবিজ্ঞানীরা এসব বিষয়কে ইতিবাচক অথবা নেতিবাচক মানসিকতার ছাঁচে মূল্যায়ন করেন। সকালের সময়ের আজকের নারী উদ্যোক্তা মানসুরা স্পৃহা একজন ইতিবাচক চিন্তার মানুষ। ছোট একটি বিষয়ের মধ্যে তিনি দেখতে পারেন অপার সম্ভাবনা। তাঁর জীবনের ছোটগল্পে এর প্রকাশ আছে।

২০১৬ সালে সরলা প্রতিষ্ঠা করেন। এর আগের বছরেও তিনি জানতেন না, তাঁর ভেতরে লুকিয়ে আছে একজন ছোট উদ্যোক্তা হওয়ার স্পৃহা, যার আবির্ভার ঘটতে যাচ্ছে। ২০১৩ সালে তাঁর বিয়ে হয় আমিনুল্লাহ বাবুর সাথে। দুজনেই পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটে। ২০১৬ সালে চারুকলা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত ফাল্গুনের উৎসসে যোগ যেওয়ার জন্য একটি সাদা শাড়ি কিনেছিলেন। সেই সাদা শাড়ির উপর রং তুলির আঁচড়ে এঁকেছিলেন নকশা। সে শাড়ি পরে গিয়েছিলেন বসন্ত উৎসবে। উৎসবের ভিড়ে তিনি আদালাভাবে প্রশংসা পেয়েছেন শাড়ির নকশার কারণে। সেদিনের সে প্রশংসাসূচক শব্দগুলো বদলে দিয়েছে তাঁর জীবনে  চলার পথের বাঁক। শাড়ির কাপড়, তুলি আর রং মিলিয়ে মাত্র দেড় হাজার টাকা খরচ হয়েছিল শাড়িটি নকশা করতে। এরপর সিদ্ধান্ত নেন রং তুলি দিয়ে আঁকবেন শাড়ি, জামা, কাপড়। সেই থেকে শুরু। চারুকলা থেকে উচ্চ শিক্ষা শেষ করে তিনি যুক্ত হয়েছিলেন দেশের একটি প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি টেলিভিশনে সংবাদ বিভাগের প্রযোজক হিসেবে। বর্তমানে তিনি সংবাদ প্রযোজনা বিভাগের সাথেও যুক্ত আছে সে টেলিভিশনে। প্রতিদিন ভোরে বা দিনে, কোনো কোনো দিন মধ্যরাতে কাজ করতে হয় টেলিভিশনে। কাজের ফাঁকে তিনি যেটুকু সময় বের করতে পারেন, তা দিয়ে রং তুলির আঁচড় টানেন। এভাবেই তিনি উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের ব্যবসাও প্রসারিত করছেন। মাত্র ৬ বছরের ব্যবধানে তাঁর প্রতিষ্ঠানে  ৫জন স্থায়ী কর্মীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা তিনি করতে পেরেছেন। এর বাইরে সরলায় খণ্ডকালীন কাজ করছেন আরও ১০ থেকে ১২ জন কর্মী। ফেসবুক পেইজ সরলার মাধ্যমে যে উদ্যোগের শুরু হয়েছিল, সে সরলার নকশা করা পোশাক এখন অনলাইসে বিক্রি হয় সারাদেশের ক্রেতাদের কাছে। 

সরলার প্রতিষ্ঠাতা মানসুরা স্পৃহা বলেন-  ‘শিল্পের বিভিন্ন মাধ্যমে কাজের এক্সপেরিমেন্ট করছে সরলা। এরমধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য পণ্য কনভার্স জুতার উপর ফোক আর্ট পেইন্টিং, সানগ্লাস এর উপর হ্যন্ডপেইন্ট, মোবাইল কাভার,  বয়াম, রিকশাবেল, ঘড়ি, চায়ের ছোট কাপ, টিনের মগ, পটারী, মৃৎ শিল্প,কফিমগ, ট্রে, কাঁচের কাপ, স্টিলের কাপ, ছাইদানী, কাপ-পিরিচ, জগ, কাঁচের বোতল, বাঁশের ট্রে, কাঠের ট্রে, আয়না, মাটির দুল, প্লেট, মাটির হাফপ্লেট, কয়েলদানী, ব্যাজেস, ফ্রিজ ম্যাগনেট, হাতে বানানো গহনা, গিটার, হারিকেন, ক্যানভাস পেইন্টিং ইত্যাদি পণ্য তৈরি করা হয়।’

করোনাকালীন অনেকটা প্রয়োজনের তাগিদেই বদলে যায় সরলার কাজের ধরণ। সে সময় মাস্ক আর ঘরে পরার প্যন্ট বানিয়ে জনপ্রিয় হয় সরলা। মেয়েদের টপস এর ক্ষেত্রে বৈচিত্র দেখা গেলেও বেছে নেওয়ার মতো প্যন্ট, পায়জামা ততটা নেই। সেই ঘুওে ফিরে একই ধরনের প্যান্ট। এই একঘেয়েমি দূর করতে ফ্যাশনপ্রিয়দের জন্য বৈচিত্রময় বটমওয়্যারের পসরা সাজিয়েছে সরলা। যা বেচা হচ্ছে অনলাইনে। এই শীতে পোশাকে নতুন স্টাইল এনেছে সরলা। নানা রকম স্টাইলিশ প্যান্ট নিয়ে হাজির সরলা। গ্যাবার্ডিন ও ডেনিম ফরমাল টাইপ একটু ভিন্ন ডিজাইনের প্যান্ট এনেছে। 


আরও পড়ুন