লাইসেন্স ছাড়া এলপি গ্যাস ও ঝুঁকিপূর্ণ পেট্রোল অকটেনের জমজমাট বাণিজ্য

news paper

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৮-১-২০২৩ দুপুর ৪:৩২

30Views

পেট্রোল ও অকটেনের মতো দাহ্য পদার্থ খোলাবাজারে বেচাকেনা ঝুঁকিপূর্ণ। যে কোনো সময় ঘটতে পারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। অথচ নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার হাটবাজারে দেদার বিক্রি হচ্ছে এসব জ্বালানি। কেবল তাই নয়, বিধিনিষেদের তোয়াক্কা না করে বাসাবাড়িতে ব্যবহূত এলপি গ্যাসে চলছে সিএনজি চালিত অটোরিকশা, থ্রীহুইলার।

আজ ২৮ জানুয়ারী জলঢাকা পৌরসভা, টেঙ্গনমারী, কৈমারী, মিরগন্জ, বঙ্গবন্ধু হাট, শিমুলবাড়ীসহ বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা যায়, মুদি দোকান, এমনকি পানের দোকানেও এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বেচাকেনা চলছে। অনেক দোকানে মোটরসাইকেলের অকটেন, পেট্রোল বিক্রি হচ্ছে। প্রশাসনের নজরদারির অভাবে ঝুঁকিপূর্ণ এসব দাহ্য পদার্থের ব্যবসা অবাধে চলছে।

এসব জ্বালানি বিক্রিতে জড়িত নন এমন ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, মিনি পিক-আপের মাধ্যমে গ্যাস সিলিন্ডার পৌঁছে যায় দোকানে দোকানে। পিক-আপ থেকে ছুড়ে ছুড়ে নামানো হয় সিলিন্ডার। এতে যে কোনো সময় বিস্টেম্ফারণ ঘটতে পারে। লাভজনক হওয়ায় পেট্রোল-অকটেনের মতো ঝুঁকিপূর্ণ জ্বালানির ব্যবসা ক্রমে বেড়েই চলেছে। 

জানা গেছে, ১০টির কম সিলিন্ডার দোকানে থাকলে লাইসেন্সের প্রয়োজন হবে না- এমন আইনের সুযোগ নিচ্ছেন অনেক ব্যবসায়ী। কেউ কেউ প্রথমে বাসাবাড়ি বা গুদামে মজুত করেন সিলিন্ডার, সেখান থেকে অল্প অল্প করে দোকানে এনে বিক্রি করেন যাতে ১০টির বেশি না দেখায়। বিক্রির উদ্দেশ্যে সিলিন্ডার মজুত করতে হলেই অধিক নিরাপত্তার জন্য অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক, তবে তা মানছেন না খুচরা গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ীরা। মাঝেমধ্যে অন্য ব্যবসার বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চোখে পড়লেও গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যাপারে কোনো অভিযান চোখে পড়ছে না বলে দাবি এলাকাবাসীর।

কৈমারীর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মিজান বলেন, 'গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করতে লাইসেন্স লাগে, এটা আমার জানা ছিল না। অনেক দোকানদার বিক্রি করছে, তাই আমিও বিক্রি করছি। কারণ এখন তো আর সিলিন্ডার কিনতে দূরে যেতে হয় না, গাড়ি এসে দোকানে দিয়ে যায়।' জলঢাকা গোলমুন্ডা বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী হাসান আলী জানান, জলঢাকা থেকে নীলফামারী সড়কে প্রতিদিন শতাধিক সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করে। 

একেকটি গাড়ির পেছনের আসনে তিনজন ও সামনে চালকের সঙ্গে দু'জন যাত্রী নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল করছে। এসব গাড়িতে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার হচ্ছে। যে কোন মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। জলঢাকা - নীলফামারী সড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালান সোহেল মিয়া। তিনি বলেন, 'অনেক দিন ধরে এলপি গ্যাস ব্যবহার করছি, আজ পর্যন্ত কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। আমরা সাবধানতার সঙ্গে চালাচ্ছি। আগে পেট্রোল দিয়ে মাহিন্দ্রা (অটোরিকশা) চালাতাম, তাতে ব্যয় বেশি।'

নীলফামারীর ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মো. এনামুল হক বলেন, অগ্নিনির্বাপণ আইনে এভাবে গ্যাস সিলিন্ডার রাখা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। লাইসেন্সবিহীন গ্যাস, অকটেন ও পেট্রোল বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে। নীলফামারীর বিআরটিএ (বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ) মোটরযান পরিদর্শক হিমাদ্রী ঘটক বলেন, যেসব চালক গাড়িতে এলপি গ্যাস ব্যবহার করছেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

 


আরও পড়ুন