সিংগাইরে চাঁদা না পেয়ে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখমকারী আ’লীগ নেতা জামাল ভান্ডারি কারাগারে

news paper

মিজানুর রহমান, সিংগাইর

প্রকাশিত: ১-২-২০২৩ রাত ৯:৫৪

19Views

মানিকগঞ্জের সিংগাইরে চাঁদা না পেয়ে মোঃ ইয়াসিন আলী (৫৫) নামে এক ব্যাবসায়ীকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক আ’লীগ নেতা ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে। এঘটনায় থানায় মামলা হলে অভিযুক্ত প্রধান আসামী জামাল খান ভান্ডারি (৪০) কে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে থানা পুলিশ। জামাল খান ভান্ডারি একই এলাকার আব্দুল লতিফের ছেলে এবং ইউনিয়ন আ’লীগের ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক। অন্যান্য অভিযুক্তরা হচ্ছে, একই এলাকার মজিবরের ছেলে কামরুল (২৫), মৃত ফজল খানের ছেলে শরীফ (২৫), বছর উদ্দিনের ছেলে জামাল (৪০), সাত্তারের ছেলে জুলহাস (২৬), দারোগ আলীর ছেলে আনোয়ার (৪৮), আনোয়ারের ছেলে ইদ্রিস (২২) এবং ফজল মন্ডলের ছেলে সিরাজ (৪০)। সম্প্রতি ঘটনাটি ঘটেছে মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের গাজিন্দা গ্রামে।

জানা গেছে,  রাজবাড়ি জেলার বাসিন্দা ব্যবসায়ী মোতালেব হোসেন (৪৫) গাজিন্দা মেীজায় আর.এস ৩৬৪ নম্বর দাগে ৫ শতক ভূমি ক্রয় করেন। অতপর আনোয়ার আলী বাদী হয়ে আদালতে অত্র দাগে জমির দাবি করে আদালতে একটি পিটিশন মামলা (১৪৪-ধারা) দায়ের করেন। পিটিশন মামলা নং ৩৯৩ (সিং)২০২২। মামলাটির তদন্তভার পেয়ে সিংগাইর উপজেলা ভূমি অফিস মোতালেব হোসেনের পক্ষে ৩৬৪ দাগে ৫ শতাংস ভূমি ৩৫৭৭ নং দলিল মূলে প্রাপ্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। অতপর ইটের তৈরী বাউন্ডারি জোর পূর্বক ভেঙ্গে স্বল্প সময় নিজ দখলে রাখে জামাল ভান্ডারি। সেখানে একটি অস্থায়ী ডেরা বানিয়ে তাদের সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে প্রতি নিয়ত নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করে এক প্রকার লুটতরাজ ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে। জামাল ভান্ডারির সাঙ্গপাঙ্গদের মধ্যে কামরুল, শরীফ, জামাল ও জুলহাস এলাকার চিহ্নিত মাদকসেবী ও ব্যাবসায়ী। এলাকায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, ভূমি দখলসহ নানাবিধ অপরাধ এদের নিত্য দিনের মিশন। পরে মোতালেব হোসেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের দারস্ত হলে সেখানে জামাল ভান্ডারির কোন প্রকার স্বত্ব নেই বলে উল্লেখ করে প্রতিবেদন দাখিল করেন জনপ্রতিনিধি। আর এ শালিসই ‘কাল’ হয়ে দাড়ায় গ্রাম্য নিঃস্বার্থ বিচারক মোঃ ইয়াসিন আলীর। শালিশে সত্য বলে জবর দখলকারী আ’লীগ নেতা জামাল ভান্ডারিকে তিরস্কার করলে দীর্ঘদিন উৎ পেতে থাকার পর গত ১৯ জানুয়ারি ভোর বেলা ইয়াসিন কে একা পেয়ে ধারালো চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে যখম করে জামাল ভান্ডারি ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা এমনটাই বলেন ভিক্টিম পরিবার, প্রত্যক্ষদর্শী এবং এলাকাবাসি।

ভিক্টিম ইয়াসিন আলী বলেন, প্রতিদিনের মত ভোর সকালে হাটতে বের হলে উৎ পেতে থেকে আমার মাথায় ধারালো চাপাতি দিয়ে সহসা মাথায় আঘাত করে। জামাল ভান্ডারির ৬ লাখ টাকা চাঁদা দাবি ছিল। আমি বাঁধা দেয়াতে জামাল ভান্ডারি, কামরুল, শরীফ ও জামালসহ অজ্ঞাতরা পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালায়।  
প্রত্যক্ষদর্শী নবীন (২২), শরীফ (৩০) ও আব্দুল লতিফ বলেন, ঘটনাটি খুবই নেক্কার জনক। ইয়াসিন একজন পরোপকারি হিতৈষী ব্যক্তি। তাকে জামাল ভান্ডারি, কামরুল, শরীফ ও জামালসহ অজ্ঞাতরা যেভাবে ধারালো চাপাতি দিয়ে কুপিয়েছে এর ন্যায় বিচার চাই।
ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী মোতালেব হোসেন বলেন, আমি ইট দিয়ে বাউন্ডারি নির্মাণকালে ৬ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল জামাল ভান্ডারি। দিতে অস্বীকার করলে ইটের দেয়াল ভেঙ্গে দিয়ে সেখানে অস্থায়ী ডেরা বানিয়ে প্রকাশ্য মাদক সেবনের হাট বসায়। কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিবেন আমার পক্ষে দেন চেয়ারম্যান। তাছাড়াও আদালতে অত্র দাগের জমি দাবি করে পিটিশন মামলা দায়ের করেন আনোয়ার আলী। সেটি সিংগাইর উপজেলা ভূমি অফিস কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে তদন্ত প্রতিবেদন আমার পক্ষে দেন। জামাল ভান্ডারির সাঙ্গপাঙ্গরা এখনও আমাকে বিভিন্ন হুমকি ধামকি অব্যাহতভাবে দিয়ে আসছে। 
 
সিংগাইর থানার ওসি (তদন্ত) সুমন কুমার আদিত্য বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।


আরও পড়ুন