শুল্ক ফাঁকির পণ্যে সয়লাব রেয়াজউদ্দিন বাজার

news paper

এসএম পিন্টু, চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশিত: ২-২-২০২৩ দুপুর ১১:৩

8Views

প্রবাদ আছে ”কি পাওয়া যায়না রেয়াজউদ্দিন বাজারে”। হ্যা বিদেশি নিষিদ্ধ কসমেটিক্স, পারফিউম,ইলেক্ট্রনিক্স আইটেম, বিদেশি সিগারেট, এমনকি অবৈধ পথে আসা স্বর্ণের বারও মিলছে রেয়াজউদ্দিন বাজারে। বন্দর এলাকায় দায়িত্বরত কতিপয় কাস্টমস কর্মকর্তাদের সহায়তায় প্রতিনিয়ত শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বিদেশ থেকে দেশে ঢুকছে বিদেশি পণ্য। আর এসব কাজের জন্য রয়েছে একটি সংঘবদ্ধ চোরাকারবারি সিন্ডিকেট। এসব চোরাকারবারির দৌরাত্মে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ছে দেশের অর্থনীতি। মাঝে মাঝে বিশেষ অভিযানে কিছু মালামাল আটক হলেও বেশিরভাগই রয়ে যায় ধরাছোয়ার বাইরে। 
শুল্ক ফাঁকির বিষয়ে কাস্টমসের ভূমিকা নিয়ে সম্প্রতি দৈনিক সকালের সময়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। এরই ফলশ্রতিতে গত বুধবার (১লা ফেব্রুয়ারি) অভিযানে নামে জেলা প্রশাসন ও বিএসটিআই। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত’র নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে চট্টগ্রামের রেয়াজউদ্দিন বাজারের আমতলে অবস্থিত বাহার মার্কেটে অভিযান চালিয়ে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা, লক্ষাধিক টাকার পণ্য জব্দ করা হয়েছে। 
অভিযানে ৩টি দোকান থেকে প্রায় লক্ষাধিক টাকার অবৈধ মালামাল জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মালামাল এর মধ্যে ছিল শ্যাম্পু, সাবান, বেবী লোশন এবং প্রচুর শিশুখাদ্য। এগুলোর গায়ে ছিল না কোন উৎপাদনকারীর নাম, মূল্য,  উৎপাদনের তারিখ এবং মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ। এছাড়া মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক হাইড্রোকুনিনের উপস্থিতি থাকার দরুণ বাংলাদেশে নিষিদ্ধ এমন কিছু পাকিস্তানি সাবান জব্দ করা হয়। এগুলোর বেশীরভাগই বিদেশ থেকে অবৈধ পথে শুল্ক ফাকি দিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। এসময় কাজী স্টোরকে ৮০ হাজার টাকা, বশর ট্রেডিংকে ৩০ হাজার টাকা এবং ইমারত ট্রেডার্স নামে একটি দোকানকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জেলা প্রশাসনের নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 
দেশের অর্থনীতির ক্ষতি রোধ করার ওপর গুরুত্বারোপ করে কনজ্যুমারস অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সভাপতি এস এম নাজের হোছাইন বলেন, কড়া নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও বন্দর দিয়ে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বিদেশি চোরাই পণ্য দেশে ঢুকছে। এর জন্য শুধু চোরকারবারিরাই দায়ী নয়, এসব পণ্য পাচারে যারা সহায়তা করে থাকেন তারাও সমানভাবে দায়ী। সাধারণভাবেই একটা প্রশ্ন আসবে এতা আধুনিক যন্ত্রপাতি ও সুদক্ষ লোকবল থাকার পরেও অবৈধভাবে পণ্য কিভাবে দেশে ঢুকছে। বন্দরে যারা ডিউটি করছে তারা কি করছে, তা নজরদারি করতে হবে। চোরাকারবারি চক্রের সাথে কেউ জড়িত থাকলে তাকে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দিতে হবে। নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেটদের অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রনে মোবাইলকোর্টের গুরুত্ব অনেক। তবে অভিযানগুলো আরো জোরদার করতে হবে। অভিযান বন্ধ না করে তা কন্টিনিউ চালিয়ে যেতে হবে।


আরও পড়ুন