শুক্রবার টেডি ডে : যেভাবে এলো এই আদুরে পুতুল

news paper

সকালের সময় ডেস্ক

প্রকাশিত: ৯-২-২০২৩ বিকাল ৫:১১

14Views

আমরা সবাই জানি ফেব্রুয়ারি ১৪ তারিখ ভালোবাসা দিবস। তবে তার আরো আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় ভালোবাসা সপ্তাহ। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ভালোবাসা সপ্তাহ শেষ হয় ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসের মাধ্যমে।

ভালোবাসা সপ্তাহে ৭ ফেব্রুয়ারি রোজ ডে, ৮ ফেব্রুয়ারি প্রোপোজ ডে, ৯ ফেব্রুয়ারি চকলেট ডে, ১০ ফেব্রুয়ারি টেডি ডে, ১১ ফেব্রুয়ারি প্রমিজ ডে, ১২ ফেব্রুয়ারি হাগ ডে, ১৩ ফেব্রুয়ারি কিস ডে এবং সর্বশেষ ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইন’স ডে বা ভালোবাসা দিবস।

সে হিসেবে আগামীকাল ১০ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বিশ্বব্যাপী উদযাপিত হবে টেডি ডে। ভালোবাসা সপ্তাহে ভালোবাসার উপহার হিসেবে দারুণ জনপ্রিয় টেডি বিয়ার। টেডি বিয়ার কে না ভালোবাসে? প্রেম নিবেদন থেকে শুরু করে মান-অভিমান ভাঙাতে টেডি বিয়ারের জুরি নেই। তাই ভালোবাসা সপ্তাহের মধ্যে ১০ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে বেছে নেয়া হয়েছে ‘টেডি ডে’ হিসেবে। 

এই দিনে প্রিয়জনের মন জয় করতে উপহার দিন টেডি বিয়ার। সফট টয় হিসেবে দারুন জনপ্রিয় টেডি বিয়ার এক নিমেষে বদলে ফেলতে পারে আপনার গম্ভীর প্রেমিকার মেজাজ। একটা শব্দ খরচ না করেও ওই এক টেডি আপনার বার্তা বাহক হয়ে ভালোবাসার মানুষটির কাছে পৌঁছে দিতে পারে আপনার গভীরতম ভালোবাসার গোপন অনুভূতি। সব ঝগড়া, সব অভিমান ওই এক পুতুলেই ধুলোবালি হয়ে উড়ে যাবে।

প্রেমিকারাও পিছিয়ে থাকবেন না, সারা বছর তো প্রেমিকরাই আপনাদের নরম পুতুল উপহার দেন। আজ আপনি না হয় একটা টেডি দিয়ে ভালোবাসার অব্যক্ত ইস্তেহারটা পৌঁছে দিন প্রেমিকের কাছে। দেখবেন, আপনার প্রেমিক প্রবরটি এতে চমকে গেলেও মনে মনে খুশি হবেন বিস্তর।

টেডি ডে-তে ছোট ভাই-বোনকেও উপহার দিতে পারেন টেডি বিয়ার। খেলনা হিসেবে টেডি বিয়ার কতটা প্রিয় হতে পারে, তা নিজের শৈশবের দিকে তাকালে যেকেউ বুঝতে পারবেন। 

যা হোক, খেলনা হিসেবে টেডি বিয়ার অর্থাৎ ভালুকের পুতুলের উত্থান কীভাবে হলো তা জানা আছে কী? বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় এই সফট টয়-এর জন্মের পেছনে রয়েছে এক দারুণ গল্প।

১৯০২ সালের নভেম্বর মাসে মিসিসিপিতে শিকারে বেরিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট থিওডর রুজভেল্ট (ডাক নাম টেডি)। মিসিসিপি ও লুসিয়ানিয়ার সীমান্ত সমস্যা নিয়ে তখন জর্জরিত তিনি। অনেকক্ষণ খুঁজেও সেদিন ভালো শিকার পাননি রুজভেল্ট। এ দিকে নিশপিশ করছে রাইফেলের ডগা।

প্রেসিডেন্টকে খুশি করতে তার সঙ্গীরা ধরে আনেন এক লুসিয়ানিয়া কালো ভালুক ছানা। কিন্তু গাছের গুঁড়িতে বেঁধে রাখা ভালুক ছানার ওপর গুলি চালাতে মন সাড়া দেয়নি রুজভেল্টের। ছোট্ট ছানাটিকে ছেড়ে দেন তিনি।

পরবর্তীতে ‘ড্রইং দ্য লাইন ইন মিসিসিপি’ কার্টুনে এই গল্প তুলে ধরেছিলেন ওয়াশিংটনের প্রখ্যাত কার্টুনিস্ট ক্লিফর্ড বেরিম্যান। ছবিতে তিনি আঁকেন রুজভেল্ট রাইফেল হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তার পেছনে পুঁচকে এক ভালুক ছানা।

এই কার্টুন দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন ব্রুকলিনের খেলনার দোকানের মালিক মরিস মিচম। তিনি বানিয়ে ফেলেন মিষ্টি এক টেডি বিয়ার। তবে তা বিক্রি করার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না তার। দোকানের জানালার পাশে সাজিয়ে রাখেন টেডি। পাশে বেরিম্যানের আঁকা কার্টুনের কপি। তাকে অবাক করে খদ্দেররা দোকানে ঢুকেই কিনতে চান টেডি। মিচম ছুটে যান রুজভেল্টের কাছে। তার ও তার স্ত্রীর বানানো টেডি বিক্রির অনুমতি চান। অনুমতি মেলায় খেলনা হিসেবে যাত্রা শুরু হয় টেডি বিয়ারের। ১৯০৩ সালে মিচম প্রতিষ্ঠা করেন আইডিয়াল নোভেলটি অ্যান্ড টয় কোম্পানি।

তারপর থেকে পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে টেডি বিয়ার। আদুরে এই পুতুলটি শুধু উপহার হিসেবে ব্যবহার হয়। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে টেডি বিয়ার মিউজিয়াম পর্যন্ত তৈরি হয়েছে। টেডি বিয়ার নিয়ে তৈরি হয়েছে অনেক বই এবং চলচ্চিত্র। একশ বছরের বেশি সময় ধরে ভালোবাসার মানুষকে উপহার দেয়ার সামগ্রী হিসেবে ক্রমান্বয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই পুতুলটি। 


আরও পড়ুন