পানিশূন্যতা রোধে করণীয় : ডা: ফায়জুর রহমান

news paper

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫-৩-২০২৩ রাত ৮:৫৫

47Views

শরীরে পানিশূন্যতা বা পানির স্বল্পতাকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলা হয় ডিহাইড্রেশন। একজন ব্যক্তি যখন খুব অল্প পরিমাণে পানি পান করেন, তখন ব্যক্তির পানিশূন্যতা বা পানিস্বল্পতা হতে পারে। ডায়রিয়ার কারণেও শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। প্রেগনেন্সি পিরিয়ডের সময়েও পানিশূন্যতা হতে পারে। আবার দীর্ঘদিন স্বাভাবিক নিয়মে খেতে না পারার কারনেও পানিশূন্যতা হতে পারে।

আসলে বিভিন্ন কারণেই শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। বমি, জ্বর, ঘন ঘন মূত্রত্যাগ ,অতিরিক্ত ঘাম, কিডনিজনিত সমস্যা কিংবা অতিরিক্ত গরম বা ঠাণ্ডার কারণেও শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। পানিশূন্যতা হলে গলা শুকিয়ে যায়, অতিরিক্ত পিপাসা লাগে, প্রসাবের পরিমান কমে যায়, প্রসাবের রঙ গাঢ় হয়, মাথা ঘুরে কিংবা চক্কর দেয়, শরীরে দুর্বলতা বা অস্বস্থি বোধ হয়, মাংসপেশী ব্যাথাসহ মাথা ব্যাথা করে। শরীরে ব্যালেন্স থাকে না। মাথা সব সময় ঝিম ঝিম করে। স্বাভাবিকভাবে দাড়িয়ে থাকা কষ্টকর হয়ে যায়। ব্লাড প্রেশার কমে যায়।

মানুষের মস্তিষ্ক ৯০ ভাগ পানি দিয়ে তৈরি। শরীরে পানির ঘাটতি হলে মস্কিষ্কে প্রভাব পড়ে। স্মৃতি, মেজাজ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে পানিশূন্যতা। শরীরে পানির ঘাটতি হলে মুখে লালা উৎপাদন কম হয়। এ কারণে মুখে ব্যাক্টেরিয়া তৈরি হওয়ায় দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। পানিশূন্যতার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য, বুক জ্বালাপোড়া করাসহ হজমের সমস্যাও হতে পারে। শরীরে পানি কম থাকলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন এবং রক্ত উভয়ের সঞ্চালন কমে যায। যার ফলে অলসতা ও ক্লান্তি উভয়ই অনুভূত হয়। শরীরের জয়েন্টগুলি একটি অপরিহার্য অংশ হওয়ায় পানির অভাবে জয়েন্টগুলি একে অপরের সাথে ঘষা লাগে যার ফলে জয়েন্টে ব্যাথার সৃষ্টি হয়।

শিশুরা যেন পানিশূন্যতায় না ভোগে সেজন্য অভিভাবকদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। শরীরে পানিশূন্যতা বা পানি স্বল্পতার সৃষ্টি হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গুরত্বপূর্ণ পরীক্ষা নিরিক্ষা করানোর পাশাপাশি নিয়মিত ঔষধ সেবন করতে হবে। ইলেকট্রোলাইটস ইমব্যালেন্স হলে শরীরে পানিশূন্যতাসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। তাই শরীরে পানিশূন্যতা রোধে ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স করাটা অত্যাবশ্যকীয়।

পানিশূন্যতা রোধে প্রচুর পরিমানে পানি পান করতে হবে। খাবার স্যালাইন খেতে হবে। মৌসুমি ফল যেমন- আপেল, কমলা, তরমুজ, বেদানা, স্টবেরী এগুলোও পানিশূন্যতা রোধে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়া ডাবের পানিতে প্রচুর পরিমানে সোডিয়াম এবং পটাশিয়াম থাকায় এটি প্রাকৃতিক উপায়ে দেহে পানির ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে। লেবুর শরবতও পানিশূন্যতা রোধে বেশ কার্যকরী।

ডা: ফায়জুর রহমান

কনসালটেন্ট, মেডিসিন

প্রবীণ হসপিটাল, আগারগাঁও, ঢাকা। 


আরও পড়ুন