পরিবেশ বান্ধব উদ্যোগ 

সবুজ পৃথিবী গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করছেন 

news paper

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৩-৫-২০২৩ দুপুর ৪:৩৩

42Views

কানিজ সুলতানা

কানিজ সুলতানা স্বাধীনচেতা মানুষ তিনি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স শেষ করার পর ক্যারিয়ার নিয়ে যখন ভাবতেন, তখন তার ইচ্ছা হতো সৃজনশীল কিছু একটা করার। চাকুরির ছকে বাধা জীবন তার মোটেই ভালো লাগতো না। চাকরি করার যথেষ্ট যোগ্যতা থাকার পরও তিনি চাকুরির দিকে না ঝুঁকে, নতুন কিছু করার অভিপ্রায়ে সমাজের পিছিয়ে পরা মানুষের পাশে দাঁড়ালেন। গড়ে তুললেন সুবিধাবঞ্চিত নারী আর মেয়েদের শিক্ষা নিয়ে‘ মিশন হিউম্যানিটি’ নামে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান।


২০১৭ সালে জাতীয় পাট মেলায় গিয়ে যখন দেখলেন পাটের বহুমুখী ব্যবহার, তখন তিনি শুধু বিস্মিত হননি, গর্বে তার বুকটা ভরে গিয়েছিলো। তিনি ভাবলেন পাট বাংলাদেশের অর্থকরী ফসল ও সোনালী আঁশ। পাট আমার দেশের অহংকার। আর ঠিক তখন থেকেই পাট নিয়ে শুরু করলেন নানা পরিক্ষা, নিরীক্ষা। যার একটাই উদ্দেশ্য একটি সবুজ পৃথিবী গড়া। পাট দিয়ে তৈরি বস্ত্র শুধুমাত্র শীতকালে নয়, গরমেও পরা যাবে। এমন ভাবনা থেকেই জুট ফিউশন এর যাত্রা শুরু। তিনি বলেন, তাঁতশিল্প, বেতশিল্প যেগুলো আজ হারিয়ে যেতে বসেছে সেগুলোকে পাটের সাথে মিলিয়ে বাঁচিয়ে রাখা ও  জামদানীর সাথে জুটের সমন্বয় করা, আমাদের দেশের এসব পণ্য সাড়া পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেওয়া আমার উদ্যোগের উদ্দেশ্য।’   


কানিজ সুলতানা বলেন, ব্যবসা শুরু করার আগে মনে করেছিলেন যেহেতু পাট শিল্প শতভাগ আমাদের দেশীয় পণ্য। এই শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অনেক সহজ হবে কিন্তু ব্যবসায় শুরুর পর দেখলেন এখানে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কিছু সমস্যা যেমন, কারিগরের স্বল্পতা, কোনো নতুন পণ্য তৈরী করতে হলে প্রায় ২০০ গজের উপরে কাপড়ের অর্ডার দিতে হয়। তারপর নানা রকম সার্টিফিকেশনের ঝামেলার সাথে প্রতিযোগিতা তো আছেই। 
২০১৮ সালে জুট ফিউশন এর যাত্রা শুরু। বর্তমানে ৫ জন প্রত্যক্ষ আর ১৫ জন পরোক্ষ কর্মী আছে যার অধিকাংশই নারী। ইচ্ছে আছে কর্মীসংখ্যা আরো বাড়িয়ে দেশের সব জায়গায় কর্মক্ষম মানুষ গড়ে তোলা। বর্তমানে ‘জুট ফিউশন’ তৈরি করছে ‘জুট জামদানি, পাঞ্জাবি, ব্লোজার, হোম ডেকোর বিভিন্ন এক্সক্লুসিভ ব্যাগ এবং দূষণ মুক্ত পরিবেশের জন্য শপিং ব্যাগ। তিনি জানান- ‘গার্মেন্টস শিল্পের যেখানে ৯৮ পার্সেন্ট বৈদেশিক মালামালের উপর নিভরশীল হয়েও এই শিল্প বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে আমাদের দেশে শীর্ষে অবস্থান করছে।

সেখান আমাদের সোনালী আঁশ সারা বিশ্বের মধ্যে সেরা হয়েও আমরা সেই অবস্থানে যেতে পারিনি। তাই আমার উদ্দেশ্য একদিন আমরা পাট যোদ্ধারা সেই অবস্থানে যাব।’ সরকারের কাছে কি প্রত্যাশা করেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- ‘সরকার যেনো পলিথিন ব্যবহার কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করে। যাতে আমরা একটি দূষণমুক্ত বাংলাদেশ ও সবুজ পৃথীবি গড়তে পারি। সেইসাথে প্রত্যাশা পাটের সুতাগুলো আমাদের মত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখা। বাংলাদেশ পাট গবেষনা কেন্দ্রের বিভিন্ন গবেষণার পণ্যগুলো যেনো আমাদের মত ছোট উদ্যোক্তারা সহজে পেতে পারে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা।’ বর্তমানে পাটজাত পণ্যের প্রায় ৮৫০ জনের মত উদ্যেক্তা আছে। তিনি মনে করেন এর সংখ্যা আরো বাড়ানো দরকার। 

 


আরও পড়ুন