মানবিক সহায়তা কর্মীদের সুরক্ষা এবং টেকসই রোহিঙ্গা কর্মসূচীর দাবি
বিশ্ব মানবিক দিবস ২০২৪ উপলক্ষে ভার্চুয়াল আলোচনা সভা
প্রকাশিত: ১৯-৮-২০২৪ বিকাল ৬:১২
বিশ্ব মানবিক দিবস ২০২৪ উপলক্ষে ১৯ আগস্ট ২০২৪ তারিখে অ্যালায়েন্স ফর এমপাওয়ারিং পার্টনারশিপ (A4EP) এর সহযোগিতায় কোস্ট ফাউন্ডেশন, কক্সবাজার সিএসও—এনজিও ফোরাম (সিসিএনএফ) এবং বিডিসিএসও কোঅর্ডিনেশন প্রসেস কর্তৃক আয়োজিত ভার্চুয়াল সভায় বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সাড়াদান কার্যক্রমে নিযুক্ত সহায়তা কর্মী এবং স্থানীয় মানুষের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান। পাশাপাশি তারা আর্থিক সহায়তা তহবিল কমে যাওয়ায় মানবিক কার্যক্রমে ব্যবস্থাপনা ব্যয় কমানোর জন্যও আহবান জানান। বক্তারা রোহিঙ্গা ও স্থানীয় মানুষের জন্য সাড়াদান কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে বিশ্ব ব্যাংকের সাম্প্রতিক ৭০০ মিলিয়ন ডলার ঋণের যে প্রতিশ্রুতির কথা বলা হয়েছে তার সমালোচনা করেন। সভায় অংশগ্রহণকারীরা বলেন, মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে ঋণ ব্যবস্থা বিশ্বব্যাপী একটি নেতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। "মানবতার জন্য আইন— বাদ যাবে না কেউ" শিরোনামের এই অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন নারীপক্ষের শিরিন হক এবং সঞ্চালনা করেন কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কোস্ট ফাউন্ডেশনের মো. ইকবাল উদ্দিন।
প্যানেল আলোচকদের মধ্যে ছিলেন ইকভা (ICVA), সুইজারল্যান্ড থেকে মাইরেলা সুতেকিরি; ডিজাস্টার ফোরাম, বাংলাদেশ থেকে গওহর নঈম ওয়াহরা; ফিলিপাইন থেকে A4EP—এর চেয়ারপারসন, ন্যানেট এস এন্টেক্যুয়েসা; কমিউনিটি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস এশিয়া, পাকিস্তান থেকে পালওয়াশে আরবাব; হিউম্যানিটারিয়ান এইড ইন্টারন্যাশনাল, ভারত থেকে সুধাংশু শেখর সিং; স্টার্ট ফান্ড বাংলাদেশের চেয়ারপারসন, ড. মো. শহীদ উজ জামান; রূপান্তর, খুলনা থেকে রফিকুল ইসলাম; গ্রিন কক্স, কক্সবাজার থেকে ফজলুল কাদের চৌধুরী; কক্সবাজারে অবস্থিত এনজিও প্লাটফর্মের মিস মারিয়ানা নার্হি; বিএনএনআরসি, ঢাকা থেকে এএইচএম বজলুর রহমান।
মূল বক্তব্যে মো. ইকবাল উদ্দিন বলেন, মানবিক সহায়তা কর্মীরা অনেক সময় তাদের প্রাপ্য স্বীকৃতি পান না বরং সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে তারা বিভিন্ন সময়ে হামলার শিকার হন। মাইরেলা শুতেরিকি তার বক্তব্যে বেসামরিক নাগরিক, মানবিক সহায়তা কর্মী এবং মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে ব্যবহৃত স্থাপনা সুরক্ষা করার উপর জোর দেন। গওহর নঈম ওয়াহরা সংকটে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এবং তাদের অবদানকে স্বীকৃতি দেয়ার প্রতি গুরুত্ব তুলে ধরেন। ন্যানেট এস এন্টেক্যুয়েসা প্রশ্ন তুলেন যে, কেন মানবিক সহায়তা কর্মীদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়? তিনি আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের আওতায় ন্যায়বিচারের আহবান জানান। পালওয়াশে আরবাব মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে দুর্ঘটনা কমাতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করার ওপর গুরুত্ব দেন। সুধাংশু শেখর সিং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মানবিক সংগঠনগুলোর কর্মীদের মধ্যে সুবিধা ও বেতন বৈষম্যের দূর করার দাবি জানান। ড. মো. শহীদ উজ জামান আর্থিক সহায়তা তহবিলের স্থানীয়করণ ও উপনিবেশবাদ দূর করার জন্য বলেন। রফিকুল ইসলাম রোহিঙ্গা সাড়াদানে স্থানীয়করণের ক্ষেত্রে নতুন করে অঙ্গীকার করার আহ্বান জানান। এএইচএম বজলুর রহমান সংঘর্ষকালীন সাইবার আক্রমণ থেকে সতর্ক থাকা এবং ভুল তথ্যের নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক করেন। ফজলুল কাদের চৌধুরী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অভ্যন্তরে বসবাসকারী ১৪ হাজার স্থানীয় কমিউনিটির সদস্যদের দুরাবস্থার কথা তুলে ধরেন এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনার উপর জোর দেন। মারিয়ানা নার্হি রোহিঙ্গাদের মর্যাদা এবং অধিকারের উপর জোর দেন, অন্যদিকে ফেরদৌস আরা রুমি নারী ও শিশুদের সংকটকালীন সময়ে তাদের ঝুঁকি প্রশমন এবং নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন এম এ হালিম, আমির হোসেন, বরকত উল্লাহ মারুফ, মোহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ।