সাতক্ষীরায় এক কোটি টাকা ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ ডিসির বিরুদ্ধে

news paper

এস কে কামরুল হাসান, সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ২০-৪-২০২৫ দুপুর ৩:৫৫

492Views

এল আর ফান্ডের নামে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোস্তাক আহমেদের বিরুদ্ধে কোটি টাকার চাঁদা দাবী করার অভিযোগ উঠেছে। জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির কাছে তিনি এই চাঁদা দাবী করেন। দাবীর প্রেক্ষিতে জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক রেজাউল ইসলাম এডিএম রিপনের মাধ্যমে দুই দফায় ৩০ লাখ টাকা দেন। যা নিয়ে দেশজুড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা।  
যার মধ্যে একটি ভিডিওতে দেখা যায় সাতক্ষীরার ডিসি মোস্তাক আহমেদ  একজন পাঁচ বারের ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে খুবই বাজে ভাষায় হুমকি ধামকি দিচ্ছেন। বিষয়টি জেলা আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভায়ও আলোচনা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আব্দুর রউফের সাথে খারাপ আচরণ করে অন্যায় করা হয়েছে উল্লেখ করে জেলা বিএনপির আহবায়ক রহমাতুল্লাহ পলাশ বলেন, এমন আচরন জেলা প্রশাসকের কাছে কাম্য নয়। 
সূত্র আরো জানায়, ঘুষের ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে জেলার শীর্ষ দুই শিল্পপতিকে হেনস্তা করতে ডিসিআর দেওয়া জমিতে অভিযান পরিচালনা করে খাস জমি উদ্ধারের নাটকও সাজিয়েছেন ডিসি।
ডিসির অপকর্মের সহযোগী হিসেবে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের এডিএম রিপন বিশ্বাস ও নাজিরের নাম উঠে এসেছে।
সম্প্রতি ডিসি ফিল্মি কায়দা ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলামকে নাজিরের রুমে আটকে রেখে মিথ্যা জবান বন্দি নিয়েছেন বলে জানা গেছে। যা সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে সত্যতা পাওয়া যাবে। 
ডিসি মোস্তাক আহমেদ ইটভাটা মালিক সমিতির কাছে কোটি টাকা ঘুষ দাবি করেন এবং মালিক সমিতিকে জেলা প্রশাসনের এডিএমের সাথে কথা বলে টাকা দিতে বলেন। ইতোমধ্যে ইটভাটা মালিক সমিতি দুই দফায় ১ম দফায় ২০ লক্ষ ও ২য় দফায় ১০ লক্ষ মোট ৩০ লক্ষ টাকা এডিএম রিপন বিশ্বাসের মাধ্যমে এলআর ফান্ডের নামে দিয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। 
ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ডিসি সাহেব এডিএমের সাথে আলাপ করে মিটাতে বলেছিলো, এডিএমের কথায় টাকাটা নাজির নিয়েছে এলআর ফান্ড হিসেবে।
এছাড়া ডিসি’র বিরুদ্ধে ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্থদের টাকার ২% টাকা তার নাজিরের মাধ্যমে বাধ্যতামূলক নেওয়ার অভিযোগ আছে। 
এদিকে খাস জমি উদ্ধারে জেলা প্রশাসনের নামে জেলাব্যপী চাঁদাবাজী চলছে বলে জানা গেছে। সাতক্ষীরা শহরের খড়িবিলায় ৫৮০ বিঘা সরকারি সম্পত্তি, বিনেরপোতা এলাকায় নদী দখল করে প্রায় শত বিঘা খাস জমি দখলে নিয়ে ভূমি দস্যুরা স্থাপনা নির্মান করলেও ডিসির কোন নজর নেই। কতিথ আছে ডিসি ও তার সহকারীরা রীতিমত বাৎসরিক চাঁদার টাকা নিয়ে থাকেন।
এসব সামগ্রিক বিষয় এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে। এর মধ্যে খবরের অন্তরালে নামক একটি পেজে লেখা হয়েছে, পীরের খবর ঃ পীরে কামেল শেখ মুজিবের কবর জিয়ারতকারী তথাকথিত আওয়ামী হাজী মোস্তাক আহমেদ এর ঘুষ বানিজ্যে হতবাক জেলাবাসী। তিনি  সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও তাবলীগের আওয়ামী পন্থী সাদ গ্রুপের লোক হিসেবে বেশ পরিচিত। আইন শৃঙ্খলা মিটিং সহ সকল জায়গায় নিজেকে সৎ পীরে কামেল হিসেবে দাবিদার আওয়ামী হাজী মোস্তাক আহমেদ ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম নিকট কোটি টাকা ঘুষ দাবি করেন। ইতোমধ্যে রেজাউল ইসলাম সেই ঘুষের টাকা ২ দফায়  ৩০ লক্ষ টাকা দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এবিষয়ে জেলা বিএনপি ও জেলা জামায়াত ইসলামের নেতারাও অবগত আছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। 
দাবিকৃত ঘুষের টাকা এলআর ফান্ডের নাম করে ১ম দফায় ২০ লক্ষ ও ২য় দফায় ১০ লক্ষ মোট ৩০ লক্ষ টাকা জেলা প্রশাসনের এডিএম রিপন বিশ্বাসের কাছে দিয়েছেন রেজাউল ইসলাম।
সচেতন মহল ও সাধারণ মানুষ জেলার গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে এবিষয়ে তদন্তের জোর দাবি জানিয়েছেন। ডিসিকে নিয়ে লেখা ইত্তেফাকের সিনিয়র সাংবাদিক সাইদুর রহমানের ফেইসবুক স্টাটাস ভাইরাল হয়, সাতক্ষীরার একজন ব্যবসায়ী এসকে মনি লিখেছেন, শেখ মুজিবের কবর জিয়ারত করা তথাকথিত হাজি, পীরে কালেম মোস্তাক আহম্মদ। পীর সাহেব ঘুস খান না। অপেক্ষা করুন প্রমানসহ আসছে ঘুসের কাহিনী, জনপ্রতিনিধি আইনুল ইসলাম নান্টা বিচার দাবী করেছেন। এছাড়াও শত শত আইডি থেকে সাতক্ষীরা ডিসিকে তুলোধোনা করা হয়েছে।   
এবিষয়ে নাজির তানভির আহম্মেদ স্যারদের (ডিসি, এডিএম) সাথে কথা বলতে বলেন।
এডিএম রিপন বিশ্বাস বলেন, এমন কোন ঘটনা নেই। সরাসরি ডিসি সাহেবের সাথে কথা বলেন।
এব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোস্তাক আহমদ কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি। সাতক্ষীরার সচেতন মহল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোস্তাক আহমদ ও তার সহকারীদের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগের তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য মাননীয় প্রধান উদেষ্টার কাছে জোর দাবী জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন