৪৪ বছর পর রাজ্য হারালেন হরিরামপুরের সুভাষ ভদ্র
প্রকাশিত: ১৬-১-২০২২ দুপুর ২:৪৫
সুভাষ চন্দ্র ভদ্র, বয়স ৭০০ ছুঁই ছুঁই। ১৯৭৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৪৪ বছর ধরে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের গোপীনাথপুর ইউনিয়নের আটবার ওয়ার্ড সদস্য হয়েছেন। ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান হয়েছেন পাঁচবার। তবে ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে ৯নং ওয়ার্ডে নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন তিনি। নিজ দলের কয়েকজন লোকের বিরোধিতার কারণে পরাজিত হয়েছেন বলে অভিযোগ তার।
সাদামাটা জীবন তার। ডেগিরচর গ্রামের কাঁচা জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস। তিনি মৃত সতীশ চন্দ্র ভদ্রের তৃতীয় ছেলে। ৪৪ বছর মানুষের সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৭৩ সালে ঝিটকা আনন্দ মোহন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ১৯৭৩ সালে মানিকগঞ্জের দেবেন্দ্র কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। তারা চার ভাই ও তিন বোন। ভাই-বোনের মধ্যে তৃতীয় তিনি। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় দুই ভাই ভরতে চলে যান। এক সময় তার বাবার ২০০ পাখি জমি ছিল। ২০-২৫ বছর আগে সকল জমি পদ্মায় ভেঙে গেছে।
সুভাষ ভদ্র জানান, স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় তার দুই ভাই ভারতে চলে যান। তার এক ভাই তাকে ভালোবেসে তার সাথে থেকে যান। সেই ভাই বিয়ে করেননি। তিনি নিজ দেশ আর এলাকার মানুষকে ভালোবেসে দেশে থেকে গেছেন। তার বাবার ২০০ বিঘা জমি পদ্মায় ভেঙে গেছে। এখনো বাবার আমলের তৈরি ঘরে থাকেন। ৪৪ বছর মেম্বার জীবনে তিনি কোনো দুর্নীতি করেননি। ছাত্রজীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছেন। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের তিনবার সহ-সভাপতি হয়েছেন। এবার আওয়ামী লীগের কয়েকজন বিরোধিতা কনেছে বিধায় অল্প ভোটে হেরে গেছেন।
সুভাষ ভদ্র আরো জানান, এলাকার রামকৃষ্ণপুর এম এ জলিল উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির দুবার নির্বাচিত সদস্য ছিলাম। মানুষের জন্যই কাজ করেছি। এখন তিনি ধর্মীয় কাজ আর এলাকার মানুষের সাথে থেকে শেষ জীবন পার করতে চান।
সুভাষ ভদ্রের স্ত্রী বলেন, ৪৪ বছর মেম্বার থাকলেও নিজের জন্য কিছু করেননি। এখনো ভাঙা ঘরে থাকি আমরা। আমার স্বামী আওয়ামী লীগের হলেও ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের কয়েকজন বিরোধিতা করলে হেরে গেছেন।
ডেগিরচর এলাকার বিমল দাস বলেন, ৪৪ বছর মেম্বার তিনি। মানুষের জন্য কাজ করেছেন। বাবার দেয়া ঘরে এখনো থাকেন। এতদিন মেম্বারি করে নিজের ঘরও তৈরি করতে পারেননি। নিজেদের লোকজনই ভোট দেয়নি। ওয়ার্ডের কিছু আওয়ামী লীগের লোকজন বিরোধিতা করেছে।