কয়রায় লবণ পানি উত্তোলনে আমন চাষ অনিশ্চিত, হতাশায় কৃষক

news paper

সম্রাট, কয়রা

প্রকাশিত: ১৪-৫-২০২২ দুপুর ১১:১৩

20Views

ইজারাকৃত মিঠাপানির খালে লবণ পানি উত্তোলনের ফলে স্থানীয় কৃষকদের ১০০ বিঘা জমিতে আমন চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে বিপাকে ও হতাশায় পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। খুলনার কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিনাপানী এলাকায় সম্প্রতি এ ঘটনা ঘটে। কৃষকেরা প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেছেন। 
 
সরেজমিন দেখা যায়, বিনাপানী স্লুইসগেট দিয়ে উত্তর জোড়শিং খালে লবণ পানি উঠানো হয়। পানি উঠানোর কারণে খালের আশপাশের ১০০ বিঘা কৃষকের আমন চাষের জন্য প্রস্তুত জমি প্লাবিত হয়ে তলিয়ে গেছে। জমিতে আহাজারি করছেন কৃষকরা। 
 
একাধিক কৃষকের অভিযোগ, বারবার এই এলাকা দুর্যোগের কবলে পড়ে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়। তাই লবণ পানির আগ্রাসন থেকে বাঁচতে তারা মিঠাপানির ফসল চাষের সিদ্ধান্ত নেন। বিগত কয়েক বছর তারা ধান চাষ করে লাভবান হন। কিন্তু উত্তর জোড়শিং খালটি স্থানীয় প্রভাবশালী আব্দুল মান্নান কারিগর ইজারা নেয়ার পর থেকে ব্যক্তিগত মাছ চাষের জন্য বিভিন্নভাবে লবণ পানি উঠানোর পাঁয়তারা করেন। বাঁধা প্রদান করলে ভয়ভীতি দেখান। গত কয়েক দিন আগে প্রভাব খাটিয়ে লবণ পানি উঠালে পার্শ্ববর্তী ১০০ বিঘা জমি লবণ পানিতে  প্লাবিত হয়। অনিশ্চিত হয়ে পড়ে আমন চাষ। 
 
কৃষক মৃনাল কান্তি বলেন, খালটি আগে আমি ইজারা নিয়েছিলাম। সেখানে মাছ ও ধান চাষ করতাম। আমারসহ পাশের কৃষকদের উপকার হতো। এবার লবণ পানি তোলায় আমাদের আমন চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ধান লবণ পানিতে তো হবে না। কিভাবে ঋণ পরিশোধ করব, কিভাবে সংসার চলবে; তা নিয়ে আমরা চিন্তিত। আমরা মান্নান কারিগরকে মিঠাপানির খালে লবণ পানি না উঠাতে একাধিকবার অনুরোধ করলেও তিনি শোনেননি।
 
আরেক কৃষক গোপাল বিশ্বাস বলেন, জোর করে মাছের ঘেরে (খালে) লবণ পানি উঠানোর কারণে আমার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। আমাদের দুঃখ দেখার কেউ নেই।
 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল মান্নান কারিগর বলেন, আমার বদ্ধ জলমহাল, এই খালে পানি ঢোকার কোনো পথ নেই, বের হওয়ারও কোনো পথ নেই। পাশের ঘের থেকে পানি চুইয়ে (ওভার ফ্লো) হয়ে আসছে। আমি ইচ্ছাকৃতভাবে পানি উঠাইনি। কারো জমিতে গেলে আমার কি করার?
 
কয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ বিশ্বাস জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। খোঁজখবর নিচ্ছি। যদি এমন কিছু হয়ে থাকে তাহলে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরও পড়ুন