ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে ঝিনাইদহের সাংবাদিক নিরবের বিরুদ্ধে মামলা

news paper

নিজস্ব সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ১৪-৫-২০২২ দুপুর ১১:১৫

13Views

ঝিনাইদহে খাইরুল ইসলাম নিরব নামে এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণ যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের এক সাংবাদিকতার ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে উঠেছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১২ মে) মামলা ভুক্তভোগী ছাত্রী মুন্নি খাতুন নিজেই বাদি হয়ে। খাইরুল ইসলাম নিরবকে অভিযুক্ত করে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।যাহার মামলা নং২৪, তারিখঃ ১২-৫-২০২২।

মামলার এজাহার সূত্রে এবং শ্লীলতাহানির শিকার ছাত্রীর অভিযোগে  জানা যায়,আসামী খাইরুল ইসলাম নিরব(৩০) কালীগঞ্জ উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের মোঃ আজিবার মোল্যার ছেলে এবং কবি সুকান্ত সড়কস্ত জনৈক শাহিনের বাড়ির ৪র্থ তলা ভবনের দক্ষিন পাশের ভাড়াটিয়া ।মামলার বাদী ভুক্তভোগী মুন্নি খাতুন,ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হুরশংকরপুর ইউনিয়নের মোঃ রেজাউল ইসলামের এক কৃষকের মেয়ে এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণ যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের ছাত্রী।
ভুক্তভোগী ছাত্রী মুন্নি গত ইং ২৮/০৪/২০২২ তারিখ ইদুল ফিতরের ছুটিতে নিজ বসত বাড়ীতে আসে।বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইদের ছুটির আগে এই মর্মে জানায় যে,নিজ জেলার স্থানীয় সংবাদপত্রের বিষয়াবলী ইদেও ছুটির শেষে প্রথম ক্লাসে উপস্থাপন করতে হবে।সে কারনে নিজ বাড়ীতে উপস্থিত থেকে স্থানীয় সংবাত পত্রের বিষয়ে ধারনা গ্রহনের জন্য গত ইং ০৯/০৫/২০২২ তারিখ সকাল অনুমান ১০ঘটিকার ভুক্তভোগী ছাত্রী মুন্নি তার পিতার সাথে বীর শ্রেষ্ট হামিদুর রহমান স্টেডিয়ামের মেইন গেটের ওখানে পৌছে প্রেসক্লাবের অফিস খুজতে থাকাবস্থায় স্টেডিয়ামের বিপরিত পাশে সাংবাদিক অফিস লেখা একটি সাইনবোর্ড দেখতে পাই এবং অফিসটি বন্ধ থাকায় সাইনবোর্ডে থাকা মোবাইল নাম্বারটি সংগ্রহ করে নিজ বাড়ীতে চলে যায়।বাড়ীতে য়েয়ে গত ইং ০৯/০৫/২০২২তারিখ রাতে নিজ ব্যবহতমোবাইল ফোন নাম্বার ০১৩১৯-১০১৭৯৪ হতে সাংবাদিক অফিসের সাইনবোর্ড হতে সংগ্রহ করা ০১৭১৬-৫৩৮৯৫১নাম্বারে ফোন করে আমার পরিচয় এবং আমার তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজন সম্পর্কে বললে নিরব সাংবাদিক বলেন,ফোনে তো সব কিছু বলা সম্ভব নয়,আপনি কাল আমার অফিসে আসেন।তখন আপনার প্রয়োজনীয় তথ্যসমূহ দিবো।পরের দিন ১০/০৫/২০২২ তারিখে সকাল ১১টার দিকে ভুক্তভোগী ছাত্রী মুন্নি স্থানীয় পত্রিকার বিষয়ে এসাইনমেন্ট করতে গ্রামের বাড়ি থেকে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের উদ্দেশ্যে সাংবাদিক অফিসের সামনে এসে ফোন দিলে আসামী নিরব আমাকে বলেন,আমি দ্বিতীয় তলায় আছি,আমার অফিস কক্ষে আসুন।অফিস কক্ষে  ভিতরে গেলে কয়েক জন লোককে বসে থাকতে দেখেন।  তখন আসামী বলেন তার নাম খাইরুল ইসলাম নিরব এবং দৈনিক স্বাধীন বাংলা পত্রিকার জেলা প্রতিনিধ। এসময় ছাত্রীকে সাংবাদিক নিরব এসাইনমেন্টের বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে পোস্ট অফিস মোড় থেকে স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকা নিয়ে আসতে বলে। তারপর মেয়েটি পোস্ট অফিস মোড়ের পত্রিকা বিক্রির এজেন্ট অফিস থেকে স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকা নিয়ে আবার সাংবাদিক নিরবের অফিসে গেলে আবারও কয়েকজনকে বসে থাকতে দেখে। কিছুক্ষণ পরে তারা চলে যায়। এর মধ্যে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলে অফিসের সুপার উপরে বসে থাকতে বলে।তখন আসামী নিরব আমার পরিবারের বিষয়ে জানতে চান এবং আপনি কি একাই অফিসে এসেছেন কি না তা জানতে চান।তখন বিভিন্ন ধরনের কথা বলার এক পর্যায়ে আসামীর অফিস কক্ষের রুমে লাগানো সিসি টিভি ক্যামেরাটি অফ করে দেন। আসামী নিরব বলতে থাকেন যে তার সাথে সুসম্পর্ক রাখলে অনেক উপকার পাবে এবং মাসে ৫০হাজার টাকা ইনকাম হবে এবং একটা লাইন করে দিবো। এ কথা বলতে বলতে আসামী নিরব তার চেয়ার থেকে উঠে এসে সুপার উপর এসে বসে ঐ ছাত্রীর পাশে বসে গায়ের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে শ্লীলতাহানি করেন। শ্লীলতাহানির সময় ছাত্রীটি  প্রতিহত করতে গেলে আসামী তাকে জোর পূবর্ক বারংবার তার বুকের সাথে চেপে ধরে।চেপে ধরে বলতে থাকে আমরাতো সাংবাদিক,আমরা বুকের সাথে বুক মিলালে তো কোন সমস্যা হবে না।অতঃপর আসামী নিরবের মোবাইলে ফোন আসলে তাকে ছেড়ে দেয় এবং মেয়েটিকে ধমক দিয়ে বলে তুমি আজকের কথা কাউকে বলনা।বিষয়টি আমার আর তোমার মধ্যে থাকবে এবং এ ঘটনা সবার কাছে গোপন রাখতে বলেন।এক পর্যায়ে আসামীর নিকট থেকে মুক্ত হয়ে এবং ঘটনাস্থল থেকে বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিন কো-অর্ডিনেটরের সাথে আলাপ করে ১২ তারিখে থানায় মামলা করেন ঐ ছাত্রী। 

ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা কৃষক রেজাউল ইসলাম জানান, বিষয়টি নিয়ে আপস মীমাংসার জন্য কতিপয় সাংবাদিক নেতারাসহ সমাজের বিভিন্ন ব্যক্তিদের মাধ্যমে গভীর  রাত পর্যন্ত ঘটনাটি সমাধানের চেষ্টা এবং ঘটনাটি ধাপাচাপা দিতে ঘটনাটি ভিন্নভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে ছাত্রীটির পরিবারকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার পায়তারা করছে। তিনি বলেন, আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ঐ আসামী সাংবাদিক নিরবের বিচার চাই।

এই বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শেখ মোঃ সোহেল রানা বলেন,আসামী নিরব ঐ মেয়ের মাথায় হাত দেওয়ার কথা মোবাইলে স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে অভিযুক্তের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে এবং আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।


আরও পড়ুন