দেশি পশুতেই মিটবে কোরবানির চাহিদা

news paper

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৩-৬-২০২২ দুপুর ১১:১৮

66Views

চলতি বছর দেশে ১ কোটি ২১ লাখ ২৪ হাজার ৩৮৯টি কোরবানিযোগ্য পশু (গরু, ছাগল, ভেড়া ও উট) রয়েছে, যা চাহিদার থেকে ২৩ থেকে ২৪ লাখ বেশি। এ বছর কোরবনিতে পশুর সংকট হবে না, তাই দেশের বাইরে থেকে পশু আনা বন্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

সূত্র জানায়, গত বছরের কোরবানির বাজারে উঠেছিল ১ কোটি ১০ লাখ পশু।  এরমধ্যে ২৩ লাখ পশু বিক্রিই হয়নি। দেশের ১ কোটি ২১ লাখ ২৪ হাজার পশুর মধ্যে গরু ও মহিষের সংখ্যা ৪৬ লাখ ১১ হাজার ৩৮৩টি।  ছাগল-ভেড়ার সংখ্যা ৭৫ লাখ ১১ হাজার ৫৯৭। এছাড়া উট, দুম্বা ও অন্যান্য পশুর সংখ্যা ১ হাজার ৪০৯টি।

২০২১ সালে সারাদেশে ৯০ লাখ ৯৩ হাজার পশু কোরবানি হয়েছে, যার মধ্যে ৪০ লাখ ৫৩ হাজার ৬৭৯টি গরু-মহিষ, ৫০ লাখ ৩৮ হাজার ৮৪৮টি ছাগল-ভেড়া ও অন্যান্য ৭১৫টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে।

গত বছর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং আইসিটি বিভাগ, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ গবাদিপশুর ডিজিটাল হাট পরিচালনা করে; যার পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর অনলাইনে মোট ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৫৭৯টি গবাদিপশু ২ হাজার ৭৩৫ কোটি ১১ লাখ ১৫ হাজার ৬৭৮ টাকায় বিক্রি হয়। এ বছরও অনলাইন প্লাটফর্মে গবাদিপশু ক্রয়-বিক্রয়ের পরিসর বাড়ানোর লক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কাজ করছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জিনাত সুলতানা এ বিষয়ে জানান, আসন্ন কোরবানির জন্য ৮ বিভাগে কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগে ৬ লাখ ৩৭ হাজার ১৯৬টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৫ লাখ ১২ হাজার ১১৪, রাজশাহী বিভাগে ২৭ লাখ ২৮ হাজার ৪৬০, খুলনা বিভাগে ৮ লাখ ৭৯ হাজার ২৫১, বরিশাল বিভাগে ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৫৪৩, সিলেট বিভাগে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৩৫৩, রংপুর বিভাগে ১০ লাখ ৩ হাজার ২৮১ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ২ লাখ ৯ হাজার ৩৪৪টি পশু রয়েছে।

তিনি আরো জানান, পশুর একটি অংশ বরিশাল, পাবনা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, ফরিদপুর, শরীয়তপুর ও যশোর অঞ্চল থেকে ঢাকার ওপর দিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় যায়। প্রধানমন্ত্রী ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন। আগে পশুবাহী ট্রাকগুলোকে তিন-চার দিন ফেরির জন্য অপেক্ষা করতে হতো। এ বছর নির্বিঘ্নে পশু পরিবহন হবে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের এক পরিচালক এ বিষয়ে জানান, চার বছর আগে আন্তঃমন্ত্রণালয় মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয় গরু-ছাগল উৎপাদনে বাংলাদেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর পরিকল্পনা গ্রহণ করে। দেশীয় গরু উৎপাদনে কয়েকটি প্রকল্প ও টিম গঠন করা হয়। নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলা হয় খামারিদের সঙ্গে, প্রশিক্ষণ দেয়া হয় তাদের। গ্রামে নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে। সারাবছরই খামারিরা ভালো দাম পাচ্ছেন। ফলে কোরবানির ঈদের বাজারের শেষ দিন অনেক গরু ফেরত যাচ্ছে এখন। ভারত, মিয়ানমার এবং নেপাল থেকে গরু আমদানি নেমে এসেছে শূন্যের কোটায়।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহাজাদা এ বিষয়ে বলেন, চলতি বছর কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে ১ কোটি ২১ লাখের বেশি, যা চাহিদার তুলনায় বেশি। যারা হাটে যেতে চান না, তারা যেন অনলাইন থেকে পশু সংগ্রহ করতে পারেন সে ব্যবস্থাও থাকবে। অনলাইন থেকে পশু কিনে কেউ  যেন প্রতারিত না হন, সেজন্য কঠোর মনিটরিং করা হবে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এ বিষয়ে বলেন, কোরবানির জন্য পর্যাপ্ত পশু মজুদ আছে। তাই এ বছরও কোরবানিতে বাইরের দেশ থেকে একটি পশুও আসবে না। আমাদের যে পরিমাণ পশু উৎপাদন হচ্ছে সেটি চাহিদা মিটিয়েও উদ্বৃত্ত থাকবে। সীমান্ত এলাকায় কঠোর হতে বিভিন্ন সংস্থাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, যাতে বাইরের দেশ থেকে পশু না আসে। বাইরের দেশের পশু রোগ নিয়ে এলে তা দেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।’

গত বছর অনলাইনে পশু বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছিল, এবারও সে ব্যবস্থা থাকবে বলে জানান মন্ত্রী। 


আরও পড়ুন