সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ফল আগামী সপ্তাহে
প্রকাশিত: ২৪-১১-২০২২ দুপুর ১১:৩৬
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে আগামী সপ্তাহে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান এ তথ্য জানান। তবে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত পদেই নিয়োগ হবে।মাহবুবুর রহমান বলেন, ৩২ হাজার ৫৭৭ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগের অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল অর্থ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। পদ বাড়ানোর ফলে কেউ আদালতে গেলে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যেতে পারে। এ কারণেই পদের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
২০২০ সালে এই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময় পদ সংখ্যাও জানিয়েছিল অধিদপ্তর। সে সময় ডিপিই জানিয়েছিল, ৩২ হাজার ৫৭৭টি পদে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে করোনাভাইরাসের কারণে তখন পরীক্ষা আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।
দীর্ঘদিন নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ থাকায় প্রাথমিকে আরও ১০ হাজার পদ শূন্য হয়। পরবর্তীতে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের পদ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিষয়টি নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করা হয়। বৈঠকের পর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একাধিক কর্তাব্যক্তি ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের কথা জানান।
এমনকি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদায়ী সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, অনুমোদনকৃত পদ ৩২ হাজার ৫৭৭টি হলেও করোনার দুই বছরে অবসরের কারণে ১০ হাজারের বেশি পদ শূন্য থাকায় আমরা ৫৮ হাজারের মতো চলমান নিয়োগ থেকে নিয়োগ দেব। কিন্তু মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা পদসংখ্যা বৃদ্ধির বিপক্ষে, তাই পদসংখ্যা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে তারা সরে এসেছে। এটি করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত বেকারদের জন্য অত্যন্ত হতাশাজনক। কারণ, এ যাবৎকালের সাধারণত প্রতিটি নিয়োগে প্রতি তিনজন মৌখিক প্রার্থী থেকে একজনকে আনুপাতিক হারে চূড়ান্ত নিয়োগ দেওয়া হতো এবং করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অধিকাংশ প্রার্থীরই বয়সসীমা শেষ হওয়ার পথে। এমনকি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বলাই আছে, শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। তাহলে কেন এই ১০-১৫ হাজার অবসরজনিত শূন্য পদে নিয়োগ নিশ্চিত করা হবে না। কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য পূরণে ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা-২০২০’-এ চলমান নিয়োগে পদসংখ্যা বৃদ্ধি আবশ্যক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, মন্ত্রণালয় সহকারী শিক্ষক নিয়োগে পদসংখ্যা ৪৫ হাজার করার লক্ষ্যেই লিখিত পরীক্ষাতে দেড় লাখ চাকরিপ্রার্থীকে উত্তীর্ণ করা হয়েছিল। ১:৩ ফরম্যাটে নিয়োগ হওয়ার কথা ছিল। তবে কিছু কর্মকর্তার আপত্তিতে এই শেষ সময় সিদ্ধান্তটি বাতিল করা হয়।
এদিকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত সকালের সময়কে জানান, ২০২০ সালের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত পদেই নিয়োগ দেওয়া হবে। সে অনুসারে ৩২ হাজার ৫৭৭টি পদেই নিয়োগ দেওয়া হবে। বর্তমানে সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি। এসব বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষক আছেন প্রায় পৌনে চার লাখ। এ নিয়োগে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা তিন ধাপে নেওয়া হলেও চূড়ান্ত ফল একবারেই প্রকাশ করা হচ্ছে। প্রথম ধাপের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ৪০ হাজার ৮৬২ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৫৩ হাজার ৫৯৫ এবং তৃতীয় ধাপে ৫৭ হাজার ৩৬৮ জন। এ নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদন করেন ১৩ লাখ ৯ হাজার ৪৬১ প্রার্থী।
উল্লেখ্য, দুই বছর আগে সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। তখন ৩২ হাজার ৫৭৭টি পদে নিয়োগের ব্যাপারে অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর পদ বাড়িয়ে ৪৫ হাজার নিয়োগের কথা বলা হয়। করোনাসহ বিভিন্ন কারণে নিয়োগ কার্যক্রম দীর্ঘ দিন ধরে ঝুলে ছিল। এরই মধ্যে অবসরজনিত কারণে আরো ১০ হাজারেরও বেশি পদ শূন্য হয়। এই অবস্থায় ৫৮ হাজার পদে শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারেও প্রস্তাব করা গত অক্টোবরে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত হলো, ৩২ হাজার ৫৭৭ পদেই জনবল নিয়োগ দেওয়া।