মাদারীপুরে বাঁশের সাঁকোতে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে হাজারো নারী-পুরুষ

news paper

আরাফাত হাসান, মাদারীপুর

প্রকাশিত: ২৪-১১-২০২২ বিকাল ৫:১০

39Views

গ্রামাঞ্চলে বিভিন্ন খাল পারাপারের জন্য মাদারীপুরে রয়েছে শত শত বাঁশের সাকো। যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে নিয়মিত পারাপার হচ্ছে হাজারো নারী-পুরুষ ও শিশুরা। শীতের শিশির আর বৃষ্টির পানিতে সাঁকোর বাঁশ ভিজে পিচ্ছিল হয়ে যাওয়া সাঁকো পারাপারে ঘটছে অহরহ দুর্ঘটনা। 
ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে পার হতে দেরী হওয়ায় অনেক মুসল্লীরা সময় মত নামাজে অংশ গ্রহন করতে পারছেন না। সাঁকো পারাপারে ঝুঁকি থাকায় স্কুলগামী শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ ও গর্ভবতী মায়েদের পারাপার নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয় বাড়ীর লোকজনদের। গর্ভবতী মায়েদেরকে জরুরী হাতপাতালে নেওয়ার জন্য দীর্ঘ পথ ঘুরে সড়কে উঠতে হয় স্বজনদের। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাকোর পরিবর্তে জনস্বার্থে ব্রীজ, কালভার্ট ও কাঠের সেতু করা হলে জনদুর্ভোগ ও দুর্ঘটনা অনেকটাই কমবে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সাকোগুলো বাদ দিয়ে ব্রীজ, কালভার্ট করার আশ্বাস দিলেন মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুনের।
 
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নের হুগলী, ত্রিভাগদী ও রাজধরদী গ্রামের একটি খালে জনগনের পারাপারের জন্য রয়েছে ২৫টিরও বেশি বাঁশের সাকো। এ ইউনিয়নের অন্য খালে রয়েছে আরো প্রায় শতাধিক সাকো। এ সকল বাঁশের সাকোর অধিকাংশই ঝুকিপূর্ণ। ঝুকিপূর্ণ বাঁশের সাকো পার হয়ে নিয়মিত যাতায়াত করতে হচ্ছে হাট, বাজার, মসজিদ-মাদ্রাসা, হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। সাকো পারাপারে ঝুঁকি থাকায় স্কুলগামী শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ ও গর্ভবতী মায়েদের পারাপার নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয় বাড়ীর লোকজনদের। গর্ভবতী মায়েদেরকে জরুরী হাতপাতালে নেওয়ার জন্য দীর্ঘ পথ ঘুরে সড়কে উঠতে হয় স্বজনদের। অধিকাংশ খাল পারাপারের একমাত্র মাধ্যম বাঁশের সাকো হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে হাজারো নারী-পুরুষ ও শিশুদের। ঝুকিপূর্ণ বাঁশের সাকো দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে অনেক সময় মুসল্লিরা ঠিকমত সময় নামাজ পড়তে যেতে পারে না। স্কুলগামী কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরকেও পড়তে হয় ভোগান্তিতে। 
 
হুগলী গ্রামের বাসিন্দা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘শীতের শিশির আর বৃষ্টির পানিতে সাকোর বাঁশ ভিজে পিচ্ছিল হয়ে যাওয়া এ সকল সাকো পারাপারে ঘটে অহরহ দুর্ঘটনা। ঠিক মতো নামাজ পরতে যেতে পারি না। বার বার ইউনিয়ন পরিষদকে বললেও কোন কাজ হচ্ছে না।’শুধু কুনিয়া ইউনিয়নেই না এরকম জরাজীর্ণ ঝুকিপূর্ণ বাঁশের সাকো রয়েছে জেলার পাঁচটি উপজেলার অসংখ্য খালে। ফসল নিয়েও বাঁশের সাকো পারাপারে কৃষকদেরকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সাকো পারাপার হতে গিয়ে অনেকেই আহত হয়েছেন। আবার অনেকে বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন। 
 
কুনিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অমিত হোসেন কবির বলেন, ‘কুনিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় খালের উপর ঝুকিপূর্ণ বাঁশের সাকো আছে। যার কারণে আমার এসব এলাকার কোমলমতি শিশু ছাত্র-ছাত্রী বিদ্যালয়ে আসতে অনেক কষ্ট হয়। পাশাপাশি আমার ইউনিয়নের অনেক মুরব্বি নামাজ পড়তে মসজিদে যেতে এবং হাট-বাজারে যেতে অনেক কষ্ট হয়। মাদারীপুর-২ আসনের সাংসদ শাজাহান খানের নিকট ব্রীজ-কালভার্ট নির্মাণের দাবি জানিয়েছি।’
এব্যাপারে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার এখন উন্নয়নের মহাসড়কে ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত বাংলাদেশের পথে হাটছি। আমাদের পরিকল্পনা হয়েছে ২০৪১ সাল নাগাদ আমরা উন্নত বাংলাদেশ গঠন করতে চাই। আমাদের বিভিন্ন জায়গায় যে সাকোগুলো রয়েছে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সাকোগুলো রিপ্লেস করে যেখানে যেটা প্রয়োজন ব্রীজ-কালভার্ট করা হবে।’ মাদারীপুরের বিভিন্ন খালের উপর জরাজীর্ণ বাঁশের সাকোগুলো অপসারণ করে জনস্বার্থে দ্রুত ব্রীজ-কালভার্ট নির্মাণ করা হবে এমনটাই প্রত্যাশা মাদারীপুরবাসীর।

আরও পড়ুন