ফের সংঘাতের শংকা

news paper

ইউসুফ আলী বাচ্চু

প্রকাশিত: ২৭-৮-২০২৩ দুপুর ৩:১৮

121Views

১ সেপ্টেম্বর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে। তাদের টার্গেট রাজধানীতে ১০ লাখ নেতাকর্মী জমায়েত করা। অন্যদিকে একই দিন বিএনপির প্রতিষ্ঠাবাষির্র্কী। এ উপলক্ষে সারা দেশের নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজধানীতে শোভাযাত্রা করবে দলটি। তারা ঢাকায় শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা করার ঘোষণা দিয়েছেন। একই দিনে দুই দলের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘাতের আশংকা করছেন রাজধানীবাসী।

জানা গেছে, প্রতিষ্ঠার দিন সকালে কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশের কার্যালয়গুলোতে দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে কর্মসূচি শুরু করবে বিএনপি। বেলা ১১টায় শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরে ফাতেহা পাঠ ও পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হবে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শোভাযাত্রা এবং আলোচনা সভাও করবে তারা। তবে এগুলো কবে কখন কোথায় হবে তার ভেন্যু ও সময়সূচি ঠিক করে পরে জানানোর কথা রয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় কর্মসূচির বাইরে সব জেলা ইউনিট ও অঙ্গ-সংগঠনগুলো কর্মসূচি পালন করবে নিজেদের মতো করে। সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর আগে কর্মসূচি ঠিক করতে সকালে নয়াপল্টনে বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের যৌথ সভা হয়। এই দুই রাজনৈতিক দলের কর্মসূচীতে কয়েক লাখ লোক সমাগম হবে রাজধানীতে। এতে রাজধানীবাসী যেমন বিড়ম্বনায় পড়বে তেমনি দুই দলের নেতাকর্মীরা মুখোমুখী হলে সংঘর্ষের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা। 

ছাত্রলীগের সমাবেশের বিষয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম পান্থ বলেন, পহেলা সেস্টেম্বরের মবাবেশ হবে স্মরণকালের সব থেকে বড় সমাবেশ। আমার এবার টার্গেট নিয়েছি দশ লাখ ছাত্রলীগের নেতাকর্মী জমায়েত করবো। আমরা অলরেডি সারা বাংলাদেশে নির্দেশনা দিয়েছি এই সমাবেশে উপস্থিত থাকার জন্য।

ছাত্র সমাবেশের বিষয় কেন্দ্রীয় ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, আগামী পহেলা সেপ্টেম্ব ছাত্র সমাবেশ হবে জনসমুদ্র। এখানে ৮-১০ লাখ নেতাকমী ও সমর্থক উপস্থিত থাকবে। এমনভাবেই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সারা দেশে। ব্যাপক উপস্থিতির মাধ্যমে আমরা দেখাতে চাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের ছাত্র ও তরুণ সমাজ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে আছে।

জানা গেছে, পহেলা সেপ্টেম্বর বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের স্মরণে ‘ছাত্র সমাবেশ’ করবে ছাত্রলীগ। এতে প্রধান থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ব্যাপক লোক সমাগমের পাশাপাশি এবার শৃঙ্খলার ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সুশৃঙ্খল সমাবেশ নিশ্চিত করার অংশ হিসেবে এবার সমাবেশস্থলে ব্যানার নিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না নেতাকর্মীরা। এছাড়া নির্ধারিত আকারের চেয়ে বড় প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন নিয়েও সমাবেশ স্থলে প্রবেশ করতে পারবে না তারা। সর্বাধিক নেতাকর্মী ও ছাত্র শুভাকাক্সক্ষীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ছাত্রলীগের সারাদেশের সব ইউনিটকে সাতদফা নির্দেশনা দিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।
ছাত্র সমাবেশ সফল করতে ছাত্রলীগের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়, মহানগর, জেলা, কলেজ, মেডিকেল কলেজ, উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন শাখাকে সর্বাধিক উপস্থিতি নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন তারা।

ছাত্র সমাবেশে উপস্থিত ইউনিটগুলোর মধ্য থেকে সেরা ইউনিটকে সাংগঠনিকভাবে পুরস্কার এবং কোনো ইউনিট উপযুক্ত অংশগ্রহণ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও ঘোষণা দিয়েছেন ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। অন্যদিকে, বিএনপির প্রতিষ্ঠাবাষির্কী ও শোভাযাত্রা প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, দলের প্রতিষ্ঠবাষির্কীতে আমরা শান্তিপূর্ণ শোভা যাত্রা করবো। তবে কেউ যদি উস্কানী দেয় তাহলে ছেড়ে কথা বলা হবে না। তিনি বলেন, ‘আজকে সারাদেশের মানুষ একটি অত্যাচারী, একটি অনির্বাচিত, একটি অহংকারী সরকারের অধীনে। তাদের অপশাসনের কারণে আজ সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ, কর্মজীবী মানুষ, ছোট ব্যবসায়ী আজ জীবন নির্বাহ করতে পারছে না। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং এই সরকারের গণবিরোধী সিদ্ধান্তের কারণে মানুষ আজ দুঃসহ হয়ে পড়েছে। ‘জনগণ এই সরকারের পরিবর্তন চায় এবং তারা বিশ্বাস করে যদি তাদের ভোটে এই সরকার নির্বাচিত হতো তাহলে জনগণের কষ্ট হয় এরকম কোনো সিদ্ধান্ত সরকার নিতে পারত না।
রাজনীতি বিশ্লেষক ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য (ভিসি) নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, দুই দলের যে সমাবেশ হচ্ছে তাতে সংঘর্ষের মতো ঘটনা ঘটতে পারে। কেননা তারা কয়েক লাখ লোক সমাগমের আয়োজন করছে।


আরও পড়ুন