ভারতে‘টু-প্লাস-টু’ বৈঠকের পর আত্মবিশ্বাসী আ’লীগ

news paper

ইউসুফ আলী বাচ্চু

প্রকাশিত: ১৪-১১-২০২৩ বিকাল ৫:৩৯

125Views

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা কথা রয়েছে এই সপ্তাহে। ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। নির্বাচনী ইসতেহার তৈরীর কাজ ও শেষ পর্যায়। প্রার্থী তালিকাও চুরান্ত করেছে দলটি। পাশাপশি রাজপথও দখলে রেখেছে তারা। এরমধ্যে নানামূখী চাপে থাকলেও বর্তমানে কিছুটা স্বস্তি বিরাজ করছে তাদের মধ্যে।

গত শুক্রবার প্রতিবেশী দেশ ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয় ভারত আর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পররাষ্ট্র এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের ‘টু-প্লাস-টু’ বৈঠক। তাতে ভারত একটি বিষয় স্পষ্ট করেন যুক্তরাষ্টের সামনে। বাংলাদেশের নির্বাচন তাদের অভ্যান্তরীণ বিষয়। এই দেশের স্থীতিশীলতা তারা আশা করছেন। ভারত বলেছে তারা বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে নাক গলাবেন না এবং যুক্তরাষ্ট্রকে ও বলেছেন অতিরিক্ত চাপ দেয়া থেকে বিরত থাকতে। এতেকরে  ক্ষমতাসীনদের মাঝে কিছুটা স্বস্তি বিরাজ করছে।
জানা গেছে, গত শুক্রবার ভারত আর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিদেশ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের ‘টু-প্লাস-টু’ বৈঠকে বাংলাদেশ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে জানান ভারতের বিদেশ সচিব ভিনয় কোয়াত্রা।

তিনি জানান, একটি স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ ও প্রগতিশীল রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশকে সেদেশের মানুষ যেভাবে দেখতে চায়, সেই ‘ভিশন’কে ভারত কঠোরভাবে সমর্থন করে। তিনি এটাও বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন সেদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং সেদেশের মানুষই তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পরে সন্ধ্যায় যৌথ বিবৃতি জারি করেছে ভারত আর যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে অবশ্য প্রত্যাশিত ভাবেই বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গটি উল্লেখ করা হয় নি।

নিজেদের অবস্থান খুবই স্পষ্ট করে যুক্তরাষ্ট্রের সামনে তুলে ধরার বিষয়টিকে বিশ্লেষকরা ব্যাখ্যা করছেন যে আমেরিকা যাতে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বেশী চাপ না দেয়, সেই বার্তাই যুক্তরাষ্ট্রকে দিয়েছে ভারত।এই বিষয় বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রকে ভারত যা বলেছে তাতে এটি পরিষ্কার যে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার যে স্বচ্ছন্দময় পরিবেশ ভারত উপভোগ করছে সেটিকে তারা নষ্ট হতে দিতে চায় না। 

এদিকে গত ২৮শে অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর থেকে সরকার ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর বিষয়ে যে অবস্থান নিয়েছে সেটি আরও জোরালো হবারও সম্ভাবনার কথাও বলছেন অনেকে। এতে তাদের মনোবল আরও বাড়তে পারে, তা অন্যরা যা-ই মনে করুক না কেন। ভারতের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারই যে কোন পরিস্থিতিতে কাম্য।

এ বিষয় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলছেন ভারতের অবস্থানের কোন প্রতিফলন এখানে আসার সুযোগ নেই কারণ নির্বাচনটি একান্তই বাংলাদেশের নিজস্ব বিষয়। তিনি বলেন যথা সময় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সংবিধান অনুসারে হবে। 

বিএনপির অবরোধ প্রসঙ্গে আব্দুর রহমান, সরকার উৎখাতের অংশ হিসেবে বিএনপি অবরোধের নামে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা করছে। মানুষ তাদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তাই অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা তা প্রতিহত করবেন রাজপথে। মানুষের ভোগান্তি দূর করতে, দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে জনগণকে নিয়ে তারা রাজপথে রয়েছেন। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন বানচাল করার জন্য দেশের ভেতর থেকে যে ধরনের প্রতিবন্ধকতা ও চাপ থাকার কথা সেটি নেই। ফলে ভোট অনুষ্ঠান নিয়ে এখন বাড়তি কোনো ঝুঁকি নেই। বিএনপি এখন যা করছে, তা কোনোভাবেই নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়। পুরোটাই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, তা বন্ধ করতে প্রশাসন পুরোপুরি সক্ষম। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলে ভোটের আবহাওয়া তৈরি হবে। তাই বিএনপি নির্বাচনে এলো না এলো সেটি দেখার বিষয় নয়। নির্বাচন হবেই।


আরও পড়ুন