ইউএনওর শখের দৃষ্টিনন্দন ছাদবাগান
প্রকাশিত: ২০-১১-২০২৩ বিকাল ৫:৩৭
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হচ্ছে ছাদবাগান। ছাদবাগান ব্যস্ত নগর জীবনে একটু প্রশান্তির ছোঁয়া এনে দিতে পারে। গ্রামীণ আবহ আর টাটকা ফল-সবজির জুড়ি নেই ছাদবাগানে। প্রতিদিন কর্মদিবস শুরুর আগে দোতলার দৃষ্টিনন্দন ছাদবাগানে দৃষ্টি দেন ইউএনও। প্লাস্টিক ড্রামে মাটি ভরাট করে সৃজিত বাগানের প্রতিটি গাছ সুস্থ ও সতেজ আছে কি না যাচাই করেন। প্রায় তিন মাস আগে শুরু করা শখের ছাদবাগানে রোপিত গাছের সংখ্যা ২০টি। তার মধ্যে সবজি প্রজাতির একমাত্র একটি লাউগাছ ব্যতিরেকে বাকি ১৯টিই বিভিন্ন প্রজাতির সবজির চারা। নিয়মিত পরিচর্যায় সতেজ ও সবুজের আভা ছড়িয়ে বেড়ে উঠছে গাছগুলো। এমন শখের দৃষ্টিনন্দন ছাদবাগানের রূপকার ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসা. হাফিজা জেসমিন।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের তিনটি ভবনের মধ্যে মাঝখানের ভনের দোতলার খালি ছাদে সৃজন করা হয়েছে ছাদবাগানটি। বাগানের দুই সারিতে আম্রপালি ও বারোমাসি আম, জাম, জাম্বুরা, লেবু, মাল্টা, আঙ্গুর, কমলা, সফেদা, আমড়া, জামরুল, পেয়ারা, বরই ও লাউয়ের চারা রোপন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে লাউগাছে লাউ ধরতে শুরু করেছে। বরই গাছেও ফল ধরতে শুরু হয়েছে। সহজে দৃশ্যমান ছাদবাগানটি প্রতিদিন উপজেলায় আগত সেবাপ্রার্থীদের অনেকেই বাগানের সৌন্দর্য ও প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে ছাদবাগানে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
উপজেলায় সেবা নিতে আসা রফিক মিয়া, আবুল মিয়া ও হিমেল মিয়া বলেন, গাছ আমাদের খুবই পছন্দের। মাঝে মাঝে উপজেলায় আসলে এখানে গাছ দেখতে আসি। প্রকৃতিকে বাঁচানোর জন্য আমাদের বেশি বেশি গাছ লাগানো উচিত। জায়গা নেই তবুও যে গাছ লাগানো যায় তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই ছাদবাগান। বৃক্ষের মধ্যে থাকলে মন, পরিবেশও ভালো থাকে এবং আমরা অক্সিজেন পাই। ইউএনও স্যারের ছাদবাগানের এই উদ্যোগটা খুবই ভালো লেগেছে। ছাদে এভাবে গাছ লাগানোর উদ্যোগটি আসলেই প্রশংসার দাবিদার।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ও যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, পরিবেশ সুরক্ষায় বৃক্ষের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। শুধু শখে নয়, পরিবেশ রক্ষায়ও ছাদবাগান প্রয়োজন। ছাদবাগানে ফল ও সবজির কৃত্রিম সঙ্কট হ্রাসের পাশাপাশি ভবনের তাপমাত্রা বৃদ্ধি রোধ করে। তাছাড়া পরিকল্পিত ছাদবাগানে বৃক্ষের সংস্পর্শে বিচিত্র স্বাদ গ্রহণের সুযোগ ও পরিবেশ দূষণ রোধে বায়ো ডাইভারসিটি সংরক্ষণ এবং ছাদের ইনসুলেশন বুদ্ধিতে সহায়ক। উপজেলা কমপ্লেক্সের এ বাগানটি দেখে অনেকেই ছাদবাগানে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসা. হাফিজা জেসমিন বলেন, ছাদবাগান আমার শখের অংশ। তাছাড়া পরিবেশ সুরক্ষা ও জলবায়ুর ঝুঁকি মোকাবেলায় বৃক্ষের অবদান অনস্বীকার্য। পাশাপাশি ছাদবাগান হতে পারে অন্যতম আয়ের উৎস। এ ছাদবাগানটি দেখে যদি নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হয় বা আগ্রহ প্রকাশ করে তাহলে আমার প্রচেষ্টা সার্থক বলে জানান তিনি।