নিহত শ্রমিকের স্ত্রী ও সন্তানের দায়িত্ব নিলেন মাল্টিফ্যাবস্ এর এমডি মেজবা ফারুকী
প্রকাশিত: ২১-১১-২০২৩ দুপুর ৩:৩৫
গাজীপুর সিটি করপোরেশন এর কোনাবাড়ী জরুন এলাকায় শ্রমিক ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত শ্রমিক জালাল উদ্দিনের স্ত্রীর চাকরি ও সন্তানের ভরনপোষণের দায়িত্ব নিয়েছেন মাল্টিফ্যাবস্ লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক
ডা.মেজবা ফারুকী।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সকালে গাজীপুরের কাশিমপুর নয়াপাড়ায় ওই কারখানায় আসেন নিহত শ্রমিকের স্ত্রী নার্গিস পারভীন ও একমাত্র কন্যা সন্তান জান্নাতুল বাকিয়া মরিয়ম (৯)। পরে কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা.মেজবা ফারুকী তাদের হাতে চিকিৎসা বাবদ দেড় লক্ষ টাকার একটি চেক ও নগদ ২০ হাজার টাকা তুলে দেন। এছাড়াও তিনি শিশু সন্তানের লেখাপড়া থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সমস্ত দায়িত্ব নেন এবং নিহতের স্ত্রীর চাকরির ব্যবস্থা করার অঙ্গিকার করেন।
নিহত জালালের কন্যা সন্তান জান্নাতুল বাকিয়া মরিয়ম গাজীপুর জরুন এলাকায় গাজীপুর সিটি আইডিয়াল স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেনীর শিক্ষার্থী। সে বলে বাবা চাইতো আমি ডাক্তার হবো। সবসময় বাবা বলতো,আমি যেনো পড়াশোনা করে ডাক্তার হই। আমি ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করতে চাই।
নিহতের স্ত্রী নার্গিস পারভীন বলেন, আমার স্বামী মারা গেছে, আমি এখন অসহায়। আমি বিএ পাশ করে গৃহিণী ছিলাম। এখন মাল্টিফ্যাবস্ কারখানা আমাকে চাকরি দিতে চেয়েছে, এজন্য আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমার সন্তানের দায়িত্ব নিয়েছে এই ঋণ পরিশোধ করতে পারবো না। তিনি
আরো বলেন,আল্লাহর কাছে লাখো কোটি শুকরিয়া যে তুমি একজনকে নিয়ে গেছো একটি রাস্তা বন্ধ করেছ হাজার রাস্তা খুলে দিয়েছো।
মাল্টিফ্যাবস্ লিমিটেড কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক টাকা পাইছো না ডা.মেজবা ফারুকী বলেন,উদ্দেশ্যহীনভাবে যে কাজটি করা হয় সেটিই হলো মানবতা। আর মানবতা থেকেই আমি তাদের দায়িত্ব নিয়েছি। সত্যি কথা বলতে যেদিন একটি পত্রিকায় মেয়েটির ছবি দেখিছি সেদিন থেকে আমাকে খুব পিরা দিচ্ছিল। আজ আনুষ্ঠানিক ভাবে তাদের দায়িত্ব নিতে পেরে কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছি। তিনি বলেন,আজকে থেকে মরিয়মের লেখা পড়া থেকে শুরু করে বিয়ে দেওয়া পর্যন্ত সমস্ত খরচ আমি বহন করবো এবং তার স্ত্রীর চাকরীর ব্যবস্থা করবো।
এসময় উপস্থিত ছিলেন,ওই কারখানার এজিএম এইচআর এডমিন মোঃ আবু সেহাব, ম্যানেজার রিপুল মিয়া, সহকারী ব্যবস্থাপক খ. আহমাদুল কবির মান্না, এক্সিকিউটিভ মোঃ ওমর হামদু, শ্রমিক প্রতিনিধি সায়লা আক্তার ও আরিফা আক্তার, নাজমুল হুদা, মনির হোসেন,সোহাগ হোসেন প্রমুখ।
উল্লেখ্য নিহত জালাল উদ্দিন কোনাবাড়ী জরুন এলাকায় ইসলাম গ্রুপের সুইং সুপারভাইজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার বাঁশহাটি গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে। জালাল জরুন এলাকায় ফজল মোল্লার ভাড়া বাসায় সপরিবার বসবাস করতেন। গত ৮ নভেম্বর বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হন জালাল। এরপর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১১ নভেম্বর দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে মারা যান তিনি ।